পুরস্কারে অখুশি, বসের ৭০ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা
মালিকের একজন বিশ্বস্ত কর্মচারী। নিয়মিতই মালিকের বিশাল অঙ্কের টাকা বহন করতে হয় তাকে। একদিন টাকার ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতির কবলে পড়েন তিনি। ডাকাত দলের সঙ্গে লড়াই করে টাকার ব্যাগ উদ্ধার করে আনেন। কিন্তু তার এ কাজের জন্য মালিক তাকে উপহার হিসেবে দেন শুধু একটি টি-শার্ট। তিনি সেই পুরস্কার পেয়ে অখুশি হন।
এরপর তার এক বন্ধুর সঙ্গে পরকিল্পনা করেন মালিকের টাকা নিয়ে পালানোর। কয়েকদিন পর সেই সুযোগও চলে আসে। মালিক তাকে ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য ৭০ লাখ রুপি দেন। এবার দুই বন্ধু মিলে পরিকল্পনা অনুযায়ী টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের নয়াদিল্লিতে। ওই ব্যক্তির নাম ধান সিং বিশত এবং তার বন্ধুর নাম ইয়াকুব। তারা দু’জনে মিলে টাকা নিয়ে ভারতের উত্তরাখণ্ড প্রদেশের নৈনিতালে পালিয়ে যান। এরপর ওই ঘটনার প্রমাণ মুছে ফেলতে ইয়াকুব আবার ফিরে এলে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ তাকে আটক করে।
আরও পড়ুন : স্বামী ‘কুৎসিত’, তাই চুমুর সময় জিহ্বা কামড়ে ছিঁড়লেন স্ত্রী
পুলিশ জানতে পারে, বিশতের বিশাল অংকের ঋণ থাকায় মালিকের কাছে ধার হিসেবে কিছু টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু মালিক টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি চুরি করার পরিকল্পনা করেন।
পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রাজিব রঞ্জণ বলেন, তদন্ত চলাকালীন তারা ইয়াকুবকে অনুসরণ করেন। প্রাথমিকভাবে তিনি আমাদের ভুল তথ্য দিয়ে বিপথে পরিচালনা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরে ইয়াকুব স্বীকার করে যে, বিশতকে এই পরিকল্পনা করে দেয়ার মাধ্যমে তিনি চার লাখ টাকা পেয়েছেন। পুলিশ তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোঁজ করলে তিন লাখ টাকা পায়।
ইয়াকুব পুলিশকে বলেন, বিশত মাঝে মাঝেই তাকে বলতেন, মালিকের বিশাল অংকের টাকা তিনি নিয়মিতই বহন করেন। একদিন ৮০ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় কিছু ব্যক্তি তার টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। তবে ছিনতাইকারীরা সেই টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ হয় এবং আহত হন বিশত।
এ ঘটনার পর তিনি ভেবেছিলেন মালিক এজন্য তাকে কিছু নগদ অর্থ দেবেন পুরস্কার হিসেবে। কিন্তু মালিক তাকে টাকার পরিবর্তে শুধু একটি টি-শার্ট দিলে তিনি খুব হতাশ হন।
আরও পড়ুন : ঘরের দরজা ভাঙচুর করায় স্ত্রীর জরিমানা ৬৮ হাজার টাকা
বিশত তার তিন মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পরিল্পনা করছিলেন; কিন্তু আহত হয়ে শয্যাশয়ী থাকার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। ইয়াকুবের সঙ্গে মদ খাওয়ার সময় বিশত এই চুরির পরিকল্পনার কথা তাকে বলেন। বিশত পরিকল্পনা করেন এরপর যেদিন মালিক তাকে ব্যাংকে টাকা রাখার জন্য পাঠাবেন তখন সেই টাকা নিয়ে পালিয়ে যাবেন।
গত ২৮ আগস্ট মালিক তাকে এক কাস্টমারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য পাঠান। পরিকল্পনা অনুযায়ী, টাকা সংগ্রহ করার পর তিনি ইয়াকুবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইয়াকুবের দোকানের পাশে মোটরসাইকেল রেখে তিনি নৈনিতালে যান।
নৈনিতালে যাওয়ার পর ইয়াকুব প্রাথমিক প্রদেয় হিসেবে চার লাখ টাকা নিয়ে দিল্লিতে ফিরে এসে মোটরসাইকেলটি ভেঙে ভাঙারির দোকানে বিক্রি করে দেন। এরপর পুনরায় নৈনিতাল যাওয়ার পরিকল্পনা করার সময় ধরা পরেন ইয়াকুব।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এসআইএস/এমএস