চারটি রোগের কাছে হারছে মানুষ
ক্যান্সার, হৃদরোগ, শ্বাসযন্ত্রের রোগ ও ডায়াবেটিসের কারণে বিশ্বব্যাপী যত অকাল মৃত্যু হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে তা কমিয়ে আনার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, জাতিসংঘ সদস্যভুক্ত অর্ধেকেরও বেশি দেশ সে লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। নতুন একটি বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। এ রোগগুলো সাধারণভাবে ‘নন-কমিউনিকেবল ডিজিস’ নামে পরিচিত।
বৃহস্পতিবার চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটে এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
বিশ্বব্যাপী কল্যাণের নিমিত্তে ২০১৫ সালে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্র টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্র বা এসডিজিতে স্বাক্ষর করে। যেখানে দারিদ্র্য দূরীকরণ, সু-স্বাস্থ্য, ক্ষুধা বিমোচন, মানসম্মত শিক্ষাসহ মোট ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
এসডিজিতে স্বাস্থ্য বিষয়ক যতগুলো লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তার মধ্যে কেবল একটি বিষয়ের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়- বেশিরভাগ দেশ তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে।
এই প্রতিবেদনে অকাল মৃত্যু বলতে ৭০ বছরের আগের মৃত্যুকে বোঝানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অল্প কিছু দেশই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল হবে। গবেষকরা ধারণা করছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ক্যান্সার, হৃদরোগ, শ্বাসযন্ত্রের রোগ ও ডায়াবেটিসের কারণে নারীদের অকাল মৃত্যু কমিয়ে আনতে পারবে মাত্র ৩৫টি দেশ, অন্যদিকে পুরুষদের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হবে মাত্র ৩০টি দেশে।
কাঙ্খিত লক্ষ্য অনুযায়ী অকালে নারী মৃত্যুহার কমানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সফল হকে দক্ষিণ কোরিয়া। অকালে নারীমৃত্যু কমানোর ক্ষেত্রে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে তালিকায় ওপরে থাকা প্রথম পাঁচটি দেশ হলো দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, স্পেন, সুইজারল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুর।
আর এ তালিকার সবচেয়ে খারাপ করতে পারে যে দেশগুলো সেগুলো হলো- সিয়েরা লিওন, আইভরিকোস্ট, গায়ানা, ইয়েমেন এবং আফগানিস্তান।
আর পুরুষদের অকালে মৃত্যুহার ঠেকাতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সবার ওপরে থাকবে আইসল্যান্ড। এ ছাড়া তালিকার প্রথম আর চারটি দেশ হলো সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, নরওয়ে এবং বাহরাইন।
একই ক্ষেত্রে তলানিতে থাকবে যেসব দেশ- মঙ্গোলিয়া, ফিজি, কাজাখস্তান, তুর্কেমেনিস্তান এবং রাশিয়া।
যা হোক গবেষকরা বলছেন বাকি দেশগুলোর কিন্তু সব আশা শেষ হয়ে যায়নি। ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০টি দেশ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অনুযায়ী নারী মৃত্যুহার এবং ৩৫টি দেশ কাঙ্খিত লক্ষ্য অনুযায়ী পুরুষ মৃত্যুহার কমাতে পারবে।
বলা হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয় নন-কমিউনিকেবল ডিজিজের কারণে।
এসএ/এনএফ/এমএস