সৌদিতে অমানবিক নিপীড়নের শিকার বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:১৭ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সৌদি আরবে নিয়মিত শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন গৃহকর্মীর কাজ করা হাজার হাজার বাংলাদেশী নারী। সৌদিতে গৃহকর্মীর কাজ করতে যাওয়া এসব নারীর ওপর শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতন করছেন তাদের নিয়োগদাতা ও নিয়োগদাতার পরিবারের সদস্যরা।

সৌদি আরবে গৃহকর্মীর কাজ করা ২৫ বছর বয়সী শেফালী বলেন, একবার আমি দেশে ফিরে এসে ২০ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। সেসময় আমি হাঁটতেও পারতাম না।

‘তারা প্রতিদিন আমাকে চাবুক দিয়ে মারতো। আমার সাড়া শরীরে তার চিহ্ন রয়েছে। আমাকে দিনে একবার খাবার দেওয়া হতো। আমি যখন খাবার চাইতাম তখন খাবার দেয়ার বদলে আমাকে মারধর করতো।’

তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে ফিরে আসার আগের দিনও বাড়ির মালিক কয়েকবার আমার ওপর নির্যাতন চালায়। মালিকের মেয়ে আমার আঙ্গুল ভেঙ্গে দেয়। আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি।’

‘আমি যদি তাদের এসব নির্যাতনের কথা কাউকে বলি তাহলে তারা আমার জিহ্বা কেটে নেয়ার এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমার পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেও দেয়নি। আমার সম্পূর্ণ মজুরিও দেয়নি তারা।

সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার হাজার হাজার বাংলাদেশি নারীর একজন শেফালী বেগম। বেসরকারী সংগঠন ব্র্যাকের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৫ সাল থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে সৌদি থেকে দেশে ফিরে এসেছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার নারী। ১৯৯১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৩২ হাজার ৩১৭ জন বাংলাদেশি নারী কাজের সন্ধানে সৌদি আরবে যায়।

২০১৫ সালে দু’দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকে এ সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে। গত তিন থেকে সাড়ে তিন বছরে প্রায় ২ লাখ ১৮ হাজার ১৩১ জন বাংলাদেশি নারী কাজের উদ্দেশে সৌদিতে পাড়ি জমায়।

ব্র্যাকের অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তা শরিফুল হাসান বলেন, সৌদি আরবে বাংলাদেশি গৃহকর্মীরা নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। শারীরিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন, খাদ্য এবং মজুরী সমস্যাসহ আরো অনেক সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।

তিনি বলেন, আমরা এমন ঘটনাও দেখেছি যে এই নারীরা তাদের মালিকদের দ্বার মারাত্মক যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়ে গর্ভবতী হয়ে দেশে ফিরছেন।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।