মেডিকেলে ভর্তির পাস নম্বর কমছে


প্রকাশিত: ০৫:০৪ এএম, ১১ আগস্ট ২০১৫

মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর কমছে। ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ নম্বর পাওয়ার বাধ্যবাধকতা শিথিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সদ্য প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার  ফলাফল বিপর্যয় বিবেচনা ও বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) এর পাস নম্বর কমানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পাস নম্বর পুনঃনির্ধারণ করার জোর চিন্তাভাবনা চলছে।

বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিতব্য এক জরুরী সভায় এ সম্পর্কে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়,স্বাস্থ্য অধিদফতর, বিপিএমসিএ ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিপিএমসিএ) এর একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র  এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল হান্নানের  কাছে জানতে চাইলে তিনি  জানান, বিপিএমসিএ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় মেডিকেলে ১২০ ও ডেন্টাল কলেজে ১১০ পাস নম্বর করার অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়েছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত এক বৈঠক  ডেকেছেন। প্রাথমিকভাবে আগামি ১৮ সেপ্টেম্বর সরকারি বেসরকারি  মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে দিনক্ষণ চুড়ান্তভাবে ঘোষণা করা হবে।

ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর কমছে নাকি আগের মতো থাকছে এ ব্যাপারে ডা. হান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে জাগো নিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবারের বৈঠক পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, জানতে পারবেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে গত বছরের ভর্তি পরীক্ষায় ৬৮ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করেছিল।  তাদের মধ্যে ৬৬ হাজার ৯শ ৮৭ জন অংশগ্রহণ করে। মোট ২২ হাজার ৫শ ৫৯ জন পরীক্ষার্থী পাস নম্বর ৪০ পায়।

বিপিএমসিএ’র সভাপতি ডা.মোয়াজ্জেম হোসেন মঙ্গলবার সকালে জাগো নিউজকে বলেন, প্রাইভেট মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে পরীক্ষার ফলাফলের পাশাপাশি ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থী বা তার পরিবারের আর্থিক ক্ষমতা একটি অন্যতম গুরত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত বছর থেকে ১০০ নম্বরের  ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০ নির্ধারণ করে দেয়ায় বেসরকারি বহু মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের আসন শূন্য ছিল। বৃহস্পতিবারের সভায় তারা এ সংক্রান্ত  তথ্যউপাত্ত উত্থাপন করবেন।

তিনি বলেন, চলতি বছর এইচএসসির ফলাফলে বিপর্যয় ঘটেছে। গত বছরের তুলনায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার কমে গেছে। এ অবস্থায় মেডিকেল  ও ডেন্টাল কলেজে  ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর কমানো না হলে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

তিনি জানান, গত বছর বেসরকারি ১৮ ডেন্টাল কলেজে দেড় সহস্রাধিক আসনে মাত্র ১৩৮ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল। এক পর্যায়ে শুধুমাত্র প্রাইভেট ডেন্টাল কলেজে ভর্তির জন্য পাস নম্বর ৪০  থেকে কমিয়ে ৩০ নম্বর করলেও ডেন্টাল কলেজে শতকরা ৫০ ভাগ আসনও পূরণ হয়নি। প্রাইভেট সেক্টরকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা  করতে হলে ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০ এর বাধ্যবাধকতা আবশ্যিকভাবে কমাতে হবে। তারা মেডিকেল কলেজের  জন্য ১২০ ও ডেন্টাল কলেজের জন্য ১১০ নম্বর প্রস্তাব করেছেন।

উল্লেখ্য মেডিকেল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত মোট নম্বর মিলিয়ে (এসএসসির শতকরা ৪০ ও এইচএসসির ৬০) ধরে মোট ১০০ নম্বর ও ভর্তি পরীক্ষার ১০০ নম্বরসহ মোট ২০০ নম্বরের ওপর ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয় ও গত  বছর আসন শূন্য থাকার বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্যবিভাগের  কর্মকর্তাদের ভর্তি পরীক্ষার পাস নম্বর কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করা যায় কিনা তা নিয়ে চিন্তাভাবনা  করতে বলেছেন।

সূত্র জানায়, সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব না হলেও  সরকারি বেসরকারি উভয় মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের  জন্য  ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর শেষ পর্যন্ত ৩০ করা হতে পারে।

এমইউ/এসকেডি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।