সংসদীয় কমিটির কার্যক্রমে ভারতের তুলনায় পিছিয়ে বাংলাদেশ


প্রকাশিত: ০৩:২৩ পিএম, ১০ আগস্ট ২০১৫

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কার্যক্রমে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক দুর্বল। এমনকি বাংলাদেশের সংসদীয় ব্যবস্থায় যুক্তরাজ্যকে অনুসরণ করা হলেও কমিটির ক্ষেত্রে তা পালন করা হয় না।

বাংলাদেশ, ভারত ও যুক্তরাজ্য এই তিনটি দেশের সংসদীয় ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আর এ থেকে বের হয়ে আসার জন্য সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি ও সংবিধান সংশোধনের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা যায়, জাতীয় বাজেট প্রণয়নের সময় যুক্তরাজ্য ও ভারতে সংসদীয় কমিটির সম্পৃক্ততা আছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো চর্চা নেই। শুধুমাত্র প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনার সুযোগ পান এমপিরা। কিন্তু তা প্রণয়নের আগে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেন না।

এছাড়া যুক্তরাজ্যসহ উন্নত গণতান্ত্রিক বিভিন্ন দেশে সংসদীয় কমিটিকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করা হয়। যুক্তরাজ্য ও প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে আইনসভায় প্রতিনিধিত্বে সমানুপাতিক হারে কমিটিতে সদস্য ও সভাপতি করা হয়। তবে কোনো মন্ত্রী ওই কমিটির সভাপতি বা সদস্য হন না। অথচ বাংলাদেশে এর ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। মন্ত্রীরা পদাধিকার বলে বিভিন্ন কমিটিতে সদস্য হন।

বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দুই দেশে আর্থিক কমিটিগুলোর সভাপতি বিরোধী দল থেকে নির্বাচন করা হয়। উভয় দেশেই কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগ/মন্ত্রণালয়ের উত্তর দেওয়ার নির্ধারিত সময়সীমা রয়েছে এবং কমিটির সুপারিশকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়।

আর যুক্তরাজ্যে কমিটি সভার আলোচনা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সাক্ষ্য প্রদান ও তলবের প্রেক্ষিতে হাজির হওয়ার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশ থাকে। সরকারের উচ্চপদে নিয়োগে তদারকি করতে পারে কমিটি।

এছাড়া কমিটির কার্যকারিতা বিবেচনার জন্য এবং দুইটি সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন কার্যক্রম তদারকির জন্য পৃথক একটি কমিটি থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে এসবের কিছুই নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সংসদ বিষয়ক গবেষক ড. আকবর আলি খান জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের দেশের সংসদীয় কমিটিগুলো এখনো দুর্বল। তাদের কোনো ক্ষমতা নেই। কাউ হাজির না হলে জোর করার কিছু নেই। সুপারিশ করা হলেও তা বাস্তবায়ন করতে বাধ্য করতে পারেন না। এজন্য অন্যান্য সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশের মত এদেশের সংসদীয় কমিটিগুলো কার্যকর নয়। এজন্য সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি ও সংবিধান সংশোধন করে সংসদীয় কমিটিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।

সংসদ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, এদেশের সংসদীয় কমিটিগুলো দুর্বল হওয়ার প্রধান কারণ সংসদে বর্তমানে শক্তিশালী বিরোধী দল নেই। আর সংসদীয় কমিটির ক্ষমতাও খুব কম। তাই সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি ও সংবিধান সংশোধন করে সংসদীয় কমিটিগুলোকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।

এইচএস/এসএইচএস/একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।