আসাদকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:২১ পিএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস তার এই অনুরোধ রাখেননি বলে '‌‌‌‌‌‌‌ফিয়ার : ট্রাম্প ইন দ্য হোয়াইট হাউস' নামের একটি নতুন বইয়ে এ তথ্য উঠে এসেছে। এই বইয়ে বলা হয় ট্রাম্পের শীর্ষস্থানীয় উপদ্ষ্টোরা অনেক সময় ট্রাম্পের অনেক ক্ষতিকর ও মারাত্মক আচরণ এবং আদেশ অমান্য করেন।

ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারীর জন্য বিখ্যাত সাংবাদিক বব উডওয়ার্ডের এই বইটি ১১ সেপ্টেম্বর প্রকাশ পাওয়ার কথা থাকলেও মঙ্গলবার বইটি প্রকাশ করে ওয়াশিংটন পোস্ট। বইটিতে গত বিশ মাসে হোয়াইট হাউসের ভেতর যে বিষয়গুলো নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করেছে সেগুলো আলোচনা করা হয়েছে।

তবে এই বই নিয়ে ডেইলী কলারকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এটি আরেকটি বাজে বই। রিপাবলিকান দলের এই প্রেসিডেন্ট এক টুইট বার্তায় বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ জন কেলি ও অন্যান্যদের উদ্ধৃতি যেভাবে বইটিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা ‘প্রতারণাপূর্ণ, জনগণের সঙ্গে কৌতুক’।

এই বইয়ে ট্রাম্পকে এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় ক্ষেপে যান এবং আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। উডওয়ার্ড বলেন, ট্রাম্পের এ আচরণের ফলে প্রশাসনের ভেতর প্রায়ই অস্থিরতা দেখা দেয়।

এই বইয়ের ভাষ্য অনুযায়ী ২০১৭ সালের এপ্রিলে সিরিয়ার সাধারণ নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক হামলার পর ট্রাম্প তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসকে প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদকে হত্যা করার কথা বলেন।

ম্যাটিস ট্রাম্পের এ নির্দেশ ঠিক বললেও আসাদকে হত্যার পরিবর্তে সিরিয়ায় অল্প পরিমাণে বিমান হামলার পরিকল্পনা করেন। সেটা অবশ্য ব্যক্তি আসাদের জন্য কোনে হুমকি ছিলো না।

এ বইয়ের দেওয়া তথ্য মতে পরে পৃথক এক ঘটনায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী তার সহকর্মীদের কাছে ট্রাম্পের এ আচরণকে ‘পঞ্চম-ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রদের মত’ অভিহিত করেন।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস এই বইকে ওয়াশিংটনের বস্তাপচা সাহিত্য বলে অবিহিত করে বলেন, ট্রাম্প সম্পর্কে তাকে উদ্ধৃত করে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে সেটা আমার বক্তব্য নয় এবং আমার উপস্থিতিতে সেটা হয়নি।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারহ স্যান্ডার্স এই বইকে একটি মনগড়া কাহিনী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আর এসব গল্প এসেছে হোয়াইট হাউসের সাবেক অসন্তুষ্ট কর্মচারীদের কাছ থেকে যারা ট্রাম্পকে বাজে লোক হিসেবে প্রমাণ করতে চান।

জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদকে নিয়ে বইয়ে যা লেখা হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আসাদের ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। তবে প্রেসিডেন্টকে আমি এরকম কিছু বলতে শুনিনি।

১৯৭০ সালে ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি নিয়ে করা প্রতিবেদনের কারণে বিখ্যাত হন উডওয়ার্ড। এরপর থেকে তিনি প্রেসিডেন্ট প্রশাসন এবং ওয়াশিংটনের আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ভেতরকার ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু বই লিখেছেন। ওয়াশিংটন পোস্ট জানায় এই বই লেখার জন্য তিনি যে সমস্ত উপদেষ্টা এবং হোয়াইট হাউসের বেশ কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমে তথ্য পেয়েছেন তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বই প্রকাশে রাজি হন।

টিটিএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।