এক বছর পর রাখাইন পরিদর্শনে মিয়ানমারের তদন্ত কমিটি
প্রথমবারের মতো রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন করছে মিয়ানমারের স্বাধীন তদন্ত কমিশন। রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠার এক বছর পর তদন্ত কমিশনের প্রধান ও ফিলিপাইনের সাবেক উপ-পররাষ্ট্র সচিব রোজারিও মানালোর নেতৃত্বাধীন একটি তদন্ত দল গত সপ্তাহে উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইনের মাওংদাও শহর পরিদর্শন করেছেন। সেখানে রাখাইনের বিভিন্ন গ্রাম এবং সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করছেন তারা। খবর মিয়ানমার টাইমস।
রাখাইনের যে তিনটি শহরতলীতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বর্বর অভিযান চালিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম মাওংদাও। গত বছরের আগস্টে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন অার্মি (আরসা) মিয়ানমারের সেনা চেকপোস্টে হামলা চালানোর পর রাখাইনজুড়ে অভিযানের নামে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন-নিপীড়ন চালায় মিয়ানমার সেনারা।
এক বিবৃতিতে কমিশনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের ইন্ডিপেন্ডেন্ট কমিশন অব ইনকোয়ারির দ্বিতীয় বৈঠকটি খুবই ফলপ্রসূ ছিল এবং আরো সুস্পষ্ট আলোচনারও ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মাঠ পর্যায়ে এই পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে।
মাওংদাও জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইউ চিত মিও বলেন, নাগা খু ইয়া, শোয়ে জার এলাকা এবং মাওংদাওয়ের প্রশাসনিক কার্যালয় পরিদর্শন করেছে কমিশন। সহিংসতা থেকে বেঁচে যাওয়া মুসলিম, হিন্দু এবং রাখাইনদের সঙ্গে কমিশনাররা কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছেন ইউ চিত মিও।
তিনি বলেন, কমিশনের লোকজন আমাদের কাছে সহিংসতার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। গত বছর ইয়েবাও কিয়া গ্রামে সহিংসতায় নিহতদের বিষয়ে হিন্দুদের প্রশ্ন করেছে কমিশন।
কমিশনের সদস্যরা যখন গ্রামের লোকজনের সঙ্গে আলাপ করেছেন তখন দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা উ মাওং হ্লা। তিনি বলেন, কমিশনের নেতারা জানতে চেয়েছেন, এখানে থাকতে কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা। নিরাপত্তা বাহিনী ভালো আচরণ করে কিনা তাও জানতে চেয়েছেন তারা।
সেখানে সন্ত্রাসীরা আবারও ফিরে আসতে পারে বলে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এক হিন্দু নারী। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে কমিশনের সদস্যরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি, ভাইস সিনিয়র জেনারেল সোয়ে উইন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে. জেনারেল কিয়াও সোয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কমিশনের সদস্যরা। তারা সবাই কমিশনের সদস্যদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
চলতি বছরের আগস্টের ২৮ তারিখে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানান জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। গত বছর সেনাবাহিনীর ওই অভিযানের পর মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির পদত্যাগ করা উচিত বলেও উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ।
টিটিএন/আরআইপি