মানুষের গোমড়া মুখ পছন্দ নয় ছাগলের!
‘হাসতে নাকি জানেনা কেউ কে বলেছে ভাই/এই শোন না কত হাসির খবর বলে যাই।’ মনে পড়ে প্রাথমিকে ‘হাসি’ শিরোনামে একটি কবিতাটি পড়েছিলাম। কবি ও সাহিত্যিক রোকনুজ্জামান খানের মজার কবিতা এটি। কবিতাটির শেষের লাইনটা এমন-এত হাসি দেখেও যারা গোমড়া মুখে চায়/ তাদের দেখে পেঁচার মুখেও কেবল হাসি পায়।
তবে এবার পেঁচা নয়, মানুষের গোমড়া মুখ নাকি ছাগলও পছন্দ করে না। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক এমনই তথ্য দিয়েছেন।
রয়েল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন মানুষের মুখের অভিব্যক্তি বা হাবভাব ছাগলেরা বেশ ভালোই বুঝতে পারে।
শুধু যে বুঝতে পারে তা নয়। গবেষকদের তথ্য বলছে, মানুষের রাগী-রাগী অভিব্যক্তির চেয়ে হাসিমাখা বা প্রফুল্ল মুখের দিকেই ছাগলেরা বেশি আকৃষ্ট হয়।
গবেষণাটি করার সময় এতে নমুনা হিসেবে ব্যবহৃত ছাগলের সামনে একই ব্যক্তির কিছু ছবি টাঙানো হয়। এইসব ছবির মধ্যে ব্যক্তির রাগান্বিত মুখভঙ্গি ও হাসিমাখা প্রফুল্ল মুখের ছবি আলাদা-আলাদা টাঙানো হয়।
তখন দেখা যায় যে, রাগী-রাগী ছবির চেয়ে হাসিমাখা মুখের ছবিটির দিকে বেশি আকৃষ্ট হয় ছাগল এবং এই ছবিটির সাথেই অপেক্ষাকৃত বেশি সময় কাটায়।
এই থেকে গবেষকেরা সিদ্ধান্তে আসেন যে, কুকুর বা ঘোড়ার মতো পোষা প্রাণীগুলোই যে শুধু মানুষের মুখের অভিব্যক্তি বুঝতে পারে এমন নয়। বরং ছাগল বা অন্যান্য প্রাণীরাও মানুষের মুখের হাবভাব খুব ভালো বুঝতে পারে।
এই বিষয়টি নিয়েই রয়েল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত লেখাটির সহ-লেখক লন্ডন ইউনিভার্সিটির ড. এলান ম্যাকএলিগট বলেছেন, মানুষের মুখ দেখে যে প্রাণীরাও মানুষের আবেগকে বুঝতে পারে সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
এর আগে মনে করা হতো শুধু পোষা প্রাণীরাই মানুষের আবেগ বা অভিব্যক্তি ভালো টের পায়।
কিন্তু ছাগল দিয়ে এই নিরীক্ষার পর এখন বলা হচ্ছে, শুধু কুকুর বা ঘোড়া নয় বরং গৃহপালিত সকল প্রাণীই যে মানুষের আবেগ ও অভিব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে পারে। এই বিষয়ে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো।
সূত্র: বিবিসি
এসআর/আরআইপি