ধর্ষণের শিকার কিশোরীর আকুতি
দিনের পর দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়েছে এক কিশোরীকে। জোর করে তার শরীরে আঁকা হয়েছে ট্যাটু। বন্দিদশা থেকে ছাড়া পেয়ে ধর্ষকদের বিচার চেয়েছেন সেই কিশোরী। তার সেই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
মরক্কোর রাজা মোহাম্মেদ ফো'র বরাবর করা একটি অনলাইন পিটিশনে ইতোমধ্যে স্বাক্ষর করেছেন চব্বিশ হাজারের বেশি মানুষ। তারা সবাই দু'মাস আটকে রেখে ধর্ষণ এবং নির্যাতন করা কিশোরিটি যাতে ন্যায় বিচার পান, সেই দাবি জানিয়েছেন।
অনলাইন পিটিশনের আয়োজকরা বলেছেন, আটকাবস্থায় তার ওপর যত রকমের নির্যাতন সম্ভব, সবই করা হয়েছে। ১৫ ব্যক্তি তাকে ক্রমাগত ধর্ষণ করেছে, পিটিয়েছে, এমনকি তাকে ঠিকমতো খাবারও দেয়া হয়নি। তার ন্যূতম স্যানিটারি চাহিদাও পূরণ করা হয়নি। আটককারীরা তার শরীরে জোরে করে ট্যাটুও এঁকে দিয়েছে।
সতের বছর বয়সী কিশোরী স্থানীয় এক টেলিভিশন চ্যানেলকে জানিয়েছেন, একদল গুন্ডা জুন মাসে তাকে অপহরণের পর দু'মাস উলাদ ইয়াদ নামের ছোট্ট এক শহরে বন্দি করে রাখে।
বন্দি থাকাকালে কিছু মানুষ অপহরণকারীদের অর্থ দিয়ে তাকে ধর্ষণ করতো বলেও জানিয়েছেন ওই তরুণী। তিনি বলেন, তারা আমাকে খাবার বা পানি দিতো না, এমনকি আমাকে গোসলও করতে দেয়নি। আমি তাদের বিচার চাই। তারা আমার সঙ্গে যা করছে, তার মূল্য তাদের দিতে হবে।
কিশোরীর বাবা মোহাম্মেদ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, তার মেয়েকে সহায়তা করতে সরকারি কর্মকর্তা, অ্যাক্টিভিস্ট এবং সাংবাদিকরা বাড়িতে গেছেন। তিনি বলেন, আমার মেয়ের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে এবং তাকে মানসিক সহায়তা দিতে একটি মেডিকেল কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে, মরক্কোর মানবাধিকার সংগঠন কর্মী নাঈমা ওউয়ালি বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, আলোচিত কিশোরীকে অপহরণ এবং ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অন্তত ১২ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আরো কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, মরক্কোয় সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি যৌন সহিংসতার ঘটনা আলোচনায় আসার পর এ সংক্রান্ত আইন এবং শাস্তি আরো কঠোর করার আহ্বান জানিয়েছেন অ্যাক্টিভিস্টরা। দেশটির ৫০ শতাংশের বেশি নারী নানাভাবে সহিংসতার শিকার বলেও সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এসআইএস/এমএস