সুবিধা বঞ্চিতই থাকছেন নেত্রকোনার আদিবাসী নারীরা
গারো সমাজে এখনো নারীরা পরিবারের প্রধান। যুগ যুগ ধরে এ প্রথা চলে আসছে গারো নারীদের কায়িক শ্রম আর পারিবারিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে। ঘর-সংসার থেকে শুরু করে মাঠ-ঘাট পর্যন্ত সামলান তারা। তবে তারা সব দিক সামলালেও রয়ে গেছেন অবহেলা আর অন্ধকারেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবার মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এসব গারো নারী।
নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা, দূর্গাপুর ও পূর্বধলা উপজেলায় ছয়টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির প্রায় দেড় লক্ষাধিক আদিবাসী বাস করে। এর মধ্যে গারো লক্ষাধিক, হাজং প্রায় ১৫ হাজার, কোচ ১০ হাজার। এ জেলার গারো নারীরা সংসারের পাশাপাশি ক্ষেতে খামারেও কাজ করেন সমানভাবে। ঘরে-বাইরে এতো পরিশ্রমের পর এসব নারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষা আর স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক অধিকার থেকে। বড়দের পাশাপাশি স্কুল-কলেজে পড়ুয়া মেয়েরাও কাজ করে ক্ষেতে খামারে। এসব নারীরা দেশের গণতান্ত্রিক ভোটের অধিকার পেলেও পায়নি সরকারি অন্যান্য সুযোগ সুবিধা।
পাপড়ী নংমীন নামে এক গারো নারী জাগো নিউজকে জানান, আমাদের কদর সরকারের কাছে বেড়ে যায় ভোটের সময়। কিন্তু ভোট শেষ হলেই সবাই আমাদের ভুলে যায়। আমরা বিধবা ভাতা,বয়ষ্ক ভাতাসহ সরকারি কোনো সুবিধাই পাইনা। আমাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে অনেক কষ্টে লেখাপড়া করালেও তাদের চাকরি হয় না।
হাজং পরিবারের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী মৌসুমী হাজং জাগো নিউজকে জানান, আমরা স্কুলে লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্ষেতে কাজ করি। এতে করে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসারের খরচ করে স্কুলে লেখাপড়ায় ব্যয় করি। কিন্তু উপবৃত্তি ও অন্যান্য সরকারি সুযোগ সুবিধা আমাদের দেয়া হয় না।
এসব শিক্ষার্থীসহ অঞ্চলের আদিবাসীদের দাবি তাদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গারো নারীরা সমাজে বিশেষ অবদান রাখতে পারবেন বলেও জানান তারা।
এ বিষয়ে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মো. এনামুল হাসান জাগো নিউজকে জানান, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির এসব মানুষদের চাকরিক্ষেত্রে বিশেষ কোঠাসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
কামাল হোসাইন/এমজেড/পিআর