আনুগত্যে অটল থাকার আবেদন
ফেরাউন অনেক বড় নাফরমান। এমন কোনো নাফরমানি নাই যা সে করেনি। সে নিজেকে মানুষের সবচেয়ে বড় প্রভু বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। পাশাপাশি মানুষের কাছ থেকে জোর করে জুলুম নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকৃতি আদায় করতেন। যারা জুলুম নির্যাতনের ভয়ে তাকে প্রভু বলে স্বীকার করেছেন তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। আর যারা জুলুম নির্যাতন সহ্য করে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন তারাই হয়েছেন সফলকাম। দ্বীনের ওপর অটল থাকবে, সফলকাম হবে তারাই, যাদের প্রতি থাকবে আল্লাহ তাআলা অফুরন্ত নিয়ামত, রহমত তথা অনুগ্রহ। পৃথিবীতে ইসলাম বিদ্বেষী ফিতনা-ফাসাদ, জুলুম-নির্যাতনে নিজেদেরকে আল্লাহর দরবারে সঁপে দিতে আল্লাহর অনুগ্রহ একান্ত প্রয়োজন। কুরআন থেকে জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য আল্লাহর অনুগ্রহ কামনায় একটি নির্ভরযোগ্য আমল তুলে ধরা হলো-
আল্লাহ বলেন- رَبَّنا أَفرِغ عَلَينا صَبرًا وَتَوَفَّنا مُسلِمينَ
" রব্বানা আফরিগ `আলাইনা সবরান ওয়াতা ওয়াফফানা মুসলিমী-ন।"
অর্থ; `হে আমাদের রব! আমাদের সবর দান করো এবং তোমার আনুগত্য থাকা অবস্থায় আমাদের দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নাও। (সূরা আল-আ`রাফ : আয়াত ১২৬)
আয়াতের তাৎপর্য-
হজরত মুসা আলাইহস সালাম যখন পৃথিবীতে এসে আল্লাহর তাওহিদ বা একত্ববাদের আনুগত্যের দাওয়াত দিতে থাকলেন। নাফরমান ফেরাউন হজরত মুসা আলাইহি সালামকে বললেন তুমি যদি সত্য নবী হও তবে তোমার মু’জিজা দেখাও। হজরত মুসা আলাহিস সালাম তাঁর হাতের লাঠি মাটিতে ছেড়ে দিলে তা বিরাট অজগর সাপে পরিণত হয়ে ফিরাউনের দিকে ধাবিত হল। ফেরাউন ভয়ে তার আসন থেকে লাফিয়ে পড়ে বলতে লাগলো হে মুসা! তোমার সাপকে টেনে ধর। আমি তোমার ওপর ঈমান আনলাম। হজরত মুসা আলাইহি সালাম তার লাঠি ধরে অজগরকে থামালেন।
ফেরাউন হজরত মুসা আলাইহিস সালামকে বললেন, হে মুসা! তুমি কে আমি তা বলব? হজরত মুসা আলাইহিস সালাম বলেন, হ্যাঁ বলুন- তখন সে বলল, তুমিতো সেই ব্যক্তি যে আমার কাছে লালিত-পালিত হয়ে বড় হয়েছ। তার ফেরাউন হজরত মুসা আলােইহিস সালামকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়ে তার সম্রাজ্যের সব জাদুকরকে সংবাদ দিলেন।
ঘটনার বর্ণনায় এসেছে-
ফেরাউন সত্তর হাজার জাদুকরকে সংবাদ দিয়েছিলেন। সেখানে ১৫ হাজার জাদুকর মতান্তরে ৩০ হাজার জাদুকর উপস্থিত হয়েছিল। প্রত্যেকের সঙ্গে দঁড়ি এবং লাঠি ছিল। জাদুকররা হজরত মুসা এবং তাঁর ভাই হারুন আলাইহিস সালামকে নজর বন্দি করে দঁড়ি এবং লাঠি মাঠে ফেলায় সব দঁড়ি এবং লাঠি সাপে পরিণত হলো। সাধারণ মানুষ এবং হজরত মুসা ও তার ভাই ভীত হলেন। আল্লাহ মুসা আলাইহিস সালামকে বললেন হে মুসা! আপনি ভয় করবেন না। আপনি জয় লাভ করবেন। আপনি আপনার হাতের লাঠি মাটিতে ফেলেন। হজরত মুসা আলাইহিস সালাম যখন লাঠি মাটিতে ফেললেন। তাঁর লাঠি বিরাট আকার সাপে পরিণত হয়ে মাঠে কিলবিল করা সব সাপকে খেয়ে ফেলল।
ফলাফল-
জাদুকররা তা দেখে নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করল যে, হজরত মুসা আলালাইহিস সালাম আল্লাহ সত্য নবী। হজরত মুসা আলাইহিস সালাম যদি জাদুকর হতেন। তবে আমাদের সঙ্গে পারতেন না। তারা তখনই সেখানে সিজদায় লুটিয়ে পড়লেন এবং আল্লাহ ও হজরত মুসা আলাইহিস সালামের ওপর ঈমান আনলেন। এ অবস্থা দেখে ফেরাউন জাদুকরদের বললেন- তোমরা আমার অনুমতি ব্যতিত ঈমান আনলে। পাশাপাশি তাদেরকে বিভিন্ন শাস্তির কথা বলায়- প্রচণ্ড ক্ষমতার অধিকারী ফিরাউনের অত্যাচার থেকে নিজের ঈমানকে হিফাজতের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে বললেন।
আল্লাহ বলেন- رَبَّنا أَفرِغ عَلَينا صَبرًا وَتَوَفَّنا مُسلِمينَ
" রব্বানা আফরিগ `আলাইনা সবরান ওয়াতা ওয়াফফানা মুসলিমী-ন।"
অর্থ; `হে আমাদের রব! আমাদের সবর দান করো এবং তোমার আনুগত্য থাকা অবস্থায় আমাদের দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নাও। (সূরা আল-আ`রাফ : আয়াত ১২৬)
মানুষকে আল্লাহর অববাধ্যতা থেকে ফিরে এসে আল্লাহর হুকুম আহকামগুলো মেনে চলা আবশ্যক। আল্লাহর তাআলার শিখানো ভাষায় সাহায্য চাওয়াও আবশ্যক। তবেই আল্লাহ মানুষকে দুনিয়া এবং আখিরাতে দান করবেন রহমত, বরকত ও মাগফিরাত। আল্লাহ আমাদের কুরআন অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
জাগো নিউজ ২৪ ডটকমের সঙ্গে থাকুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।
এমএমএস/এমএস