দূষিত ১৫ শহরের মধ্যে ১৪টিই ভারতের
পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত ১৫টি শহরের মধ্যে ১৪টিই ভারতের। এরমধ্যে সবচেয়ে দূষিত শহর হচ্ছে কানপুর। গত মে মাসে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে বায়ু দূষণের কারণে এশিয়া এবং আফ্রিকায় মানুষের গড় আয়ু দেড় থেকে দু’বছর পর্যন্ত কমছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অস্টিন পরিচালিত এক গবেষণায় এই তথ্য মিলেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন তারা বাতাসে ২.৫ মাইক্রোনের চেয়ে ছোট কণা বা পিএমের উপস্থিতি পরীক্ষা করেন। ‘পিএম ২.৫’ বলে পরিচিত এসব কণা ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করতে পারে। যা হৃদরোগ, স্ট্রোক, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ও ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
তাদের মতে, বাতাস আরও পরিষ্কার করা গেলে সারা বিশ্বে, বিশেষত বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে মানুষের আয়ু উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পাবে।
‘গ্লোবাল অ্যাম্বিয়েন্ট এয়ার কোয়ালিটি ডাটাবেস ফর-২০১৮’ নামক ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের সবচেয়ে দূষিত শহর হচ্ছে কানপুর। এই শহরের প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ১৭৩ মাইক্রোগ্রাম রয়েছে।
এছাড়া ফরিদাবাদ, বারাণসী, গয়া, পাটনার বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে মাইক্রোগ্রামের পরিমাণ যথাক্রমে ১৭২, ১৫১, ১৪৯ এবং ১৪৪। এর পরেই রয়েছে রাজধানী দিল্লি। সেখানে বায়ু দূষণের মাত্রা ১৪৩। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এখন পর্যন্ত ২০১৭ সালে বাতাসে উপস্থিত দূষণ কণা সংক্রান্ত কোনো তথ্যই প্রকাশ করেনি।
গবেষণায় দেখা গেছে, পরিবেশের পিএম২.৫-এর কারণে বাংলাদেশের মানুষ স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৮৭ বছর তথা ২২ মাস কম বাঁচেন। একই কারণে মানুষের আয়ু মিশরে ১.৮৫ বছর, পাকিস্তানে ১.৫৬ বছর, ভারতে ১.৫৩ বছর, সৌদি আরবে ১.৪৮ বছর, নাইজেরিয়ায় ১.২৮ বছর, এবং চীনে ১.২৫ বছর কমছে।
গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক জশুয়া আপ্তে বলেন, ‘ক্ষুদ্র কণার দ্বারা বায়ুদূষণ মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এটা জানাই ছিল। কিন্তু এটা পৃথিবীর মানুষের আয়ুও আসলে কতটা কমিয়ে আনছে সেটাই আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে চিহ্নিত করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘ফুসফুস ও স্তনের ক্যানসার নিরাময়ের পদ্ধতি আবিষ্কার করলে যত মানুষের উপকার হবে, তার চেয়ে বেশি মানুষ বায়ু দূষণের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত। এশিয়ার বাতাসে পি এম ২.৫ উপকরণ কোনোভাবে দূর করা গেলে ৬০ বছর বয়সীদের ৮৫ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বিশেষ লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে।’
এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি লেটারসে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বায়ু দূষণের আওতায় ঘরে এবং বাইরের, দু’ধরনের দূষণই পড়ছে। ওজোন দূষণের পাশাপাশি ঘরে রান্না করা, খাবার গরম করাও কিন্তু দূষণ বাড়াচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় এই দু’ধরনের দূষণই বাড়ছে।
এমএমজেড/জেআইএম