পুলিশই মোবাইল চোর!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৪৮ এএম, ২৭ আগস্ট ২০১৮

সাধারণ পোশাকে থানা থেকে বেরিয়ে পড়লেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। বাজারের এদিক ওদিক ঘরতে ঘুরতে মানুষজনের পকেট থেকে মোবাইল হাতিয়ে নিতে শুরু করলেন। বাজারে তখন প্রচুর মানুষ, কেনাকাটায় ব্যস্ত। কয়েক ঘণ্টায় সুচারুভাবে এক এক করে দশটি মোবাইল চুরি করলেন তিনি।

তারপর সেগুলো নিয়ে সোজা ফিরে এলেন জামশেদপুরের বিরসানগর থানায়। রেখে দিলেন ড্রয়ারে। গত কয়েক মাস ধরে মোবাইল চোরের এক চক্র সক্রিয় রয়েছে কলকাতার বিরসানগরের সানডে বাজারে। মানুষের অসবাধনতার সুযোগ নিয়ে পকেট থেকে মোবাইল হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। কয়েকবার ধরাও পড়েছে চোর। মানুষকে সচেতন করতে বাজার ও এলাকায় লিফলেট দিয়ে প্রচারণাও চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু কাজ হয়নি। মোবাইল চোরদের দৌরাত্ম্য ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু তাই বলে একদিনে দশটা মোবাইল চুরি! শোরগোল পড়ে গেছে এলাকায়।

থানায় অভিযোগ জানাতে আসেন চুরি যাওয়া মোবাইলের মালিকেরা। থানায় গিয়ে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে অভিযোগ তোলেন সানডে বাজারের বাজার সমিতির সদস্যরা। সঙ্গে বাজারের অন্যান্য মানুষও। থানায় যখন এ নিয়ে রীতিমতো উত্তেজনা পুলিশ কর্মকর্তা ভূষণ কুমার তখন শান্ত ভাবে চুরি যাওয়া মোবাইলগুলো একে একে বের করে আনলেন। ড্রয়ার থেকে রাখলেন নিজের টেবিলে।

সকলেই অবাক হলেন। ব্যাপারটা কী সেটাই সবার প্রশ্ন। মুখ খুললেন ভূষণ কুমার। জানালেন, মানুষ জামা ও প্যান্টের পকেটে এমনভাবে মোবাইল রাখছেন, যে তা দেখা যাচ্ছে। এখন স্মার্টফোন বেশ বড় হওয়ায় অনেক সময় তা পকেট থেকে কিছুটা বেরিয়েও থাকছে।

ভূষণ কুমার বলেন, মানুষ যখন কেনাকাটায় ব্যস্ত, সেই সুযোগে পকেটমারের দল তাদের কাজ সারছে। তাই ঠিক করলাম মানুষকে সচেতন করতে একটু শিক্ষা দেওয়া দরকার। যেমন ভাবা তেমন কাজ। নেমে পড়লেন মোবাইল চোরের ভূমিকায়।

অপারেশনের কথা জানিয়ে ভূষণ কুমার বলেন, আমার মতো আনাড়ি লোকও যদি মানুষের পকেট থেকে মোবাইল হাতিয়ে নিতে পারে, তবে মানুষের অবশ্যই আরও সতর্ক ও সচেতন হওয়া দরকার। নয়তো কপালে দুঃখ আছে।

সচেতন হয়েছেন সবাই। বিরসানগরের বাসিন্দা বিজয় যাদব বললেন, সত্যিই আর পকেটে এভাবে মোবাইল রাখব না। অন্যদেরও রাখতে বারণ করব। সানডে বাজার সমিতির এক সদস্য বলেন, আমরাও মানুষকে সচেতন করতে এ বার থেকে প্রচার চালাব।

টিটিএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।