মৃত শিশুকে বাঁচাতে তোড়জোড় চললো দেড়দিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৩৩ এএম, ১৯ আগস্ট ২০১৮

এ যুগেও অন্ধ কুসংস্কারমুক্ত হতে পারেনি ভারতের গ্রামীণ জনপদ। এ কারণে সাপের কামড়ে মৃত শিশু কন্যাকে বাঁচানোর আশায় দেড় দিন ধরে নদীতে ভাসানো, ওঝা-গুনিন দিয়ে তুকতাক, রাতভর পুজা করা হয়। তারপর কলার ভেলায় মৃত ওই শিশুর সঙ্গে ঘাতক মরা সাপটিকে বেঁধে নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার আয়োজন করা হয়। তবে তার আগেই খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁঁছে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুর থানার কুঁই গ্রামে।

পুলিশ ও স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান ১৪ আগস্ট বিনপুর থানার কুঁই গ্রামের বাসিন্দা দিন মজুর বাপি খাঁ তার চার বছরের মেয়ে অনুকে নিয়ে রাতে খাটে ঘুমাচ্ছিল। গভীর রাতে শিশুটি যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠে। বাবাকে ডেকে বলে তাকে সাপে কামড়েছে। কিন্তু বাপি খাঁ কিছু হয়নি বলে তাকে আবার ঘুম পাড়িয়ে দেয়। পরের দিন সকালে শিশুটির শরীর খারাপ ও বমি করতে শুরু করে। অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে প্রথমে বিনপুরে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিয়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। কিন্তু পথেই তার মৃত্যু হয়। এরপর শিশুটির পরিবার আর গ্রামে ফিরে আসেনি। তারা মনে করে নদীতে ভাসিয়ে দিলে সন্তান বেঁচে উঠবে। খাঁ পরিবার এরপর মৃত অনুকে নিয়ে সোজা চলে যায় লালগড় থানার লাঘাটা গ্রামে। ওখানে বিকেল নাগাদ একটি ভেলাতে মৃত অনুকে তোলা হয়। সেই ভেলাতে বেঁধে দেওয়া হয় মরা সাপ টিকেও। ফুল, মালা দিয়ে কংসাবতী নদীর জলে ভসিয়ে দেয়া হয়। এর কিছু পরেই তারা খবর পায় গ্রামের এক গুনিন আছে যে কি-না সাপে কাটা মৃতকেও বাঁচিয়ে তুলতে পারে। এরপর নদী থেকে মৃত দেহটি তুলে আনা হয়। লাঘাটা গ্রামের ওই গুনিনের বাড়িতে রাতভর চলে মনসা পূজা। কিন্তু এদিন বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত পুজা চললেও কোনো সাড়া না মেলায় আবারও মরদেহটকে নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় লালগড় থানার পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে লালগড় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থা কেন্দ্র নিয়ে যায়।

সূত্র : শিলিগুঁড়ি বার্তা

এমএমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।