কেরালায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬৪
ভারতের কেরালা রাজ্যে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত ১৬৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। গত আটদিন ধরে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে রাজ্যজুড়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন স্থানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও অনেক স্থানে বাড়ি-ঘর এবং ব্রিজ ধসে পড়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বিমান এবং রেল সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
রাজ্যজুড়ে ১২শ আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে ইতোমধ্যেই দেড় লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার উদ্ধারকর্মী দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে সহায়তা দিতে কাজ করে যাচ্ছেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকালে কেরালার ১২ জেলা থেকে তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, রাজ্যজুড়ে উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযানে আরও পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃষ্টি থামার কোনও লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। আবহাওয়া দপ্তর বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কেরালা জুড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় দশগুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আরও দু-একদিন এভাবেই বৃষ্টি হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। ফলে রাজ্যজুড়ে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শনিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। কেরলের ১৪টির মধ্যে তেরোটি জেলাতেই সতর্কতা জারি হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়ন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি খুবই গুরুতর হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্ধার কাজে আরও বেশি করে কেন্দ্রীয় সাহায্য চেয়েছি।
কেরলের বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন টেলিকম সংস্থা। কথা বলা থেকে শুরু করে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য কোনও খরচ হচ্ছে না। তাছাড়া মোবাইল বিল জমা দেওয়ার সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে। ত্রিচুর থেকে শুরু করে আলুভার মতো জেলায় উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে সেনা বাহিনী।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতো এনডিআরএফ-এর আরও ১২টি দল কেরালায় পাঠানো হয়েছে। সকালে প্রধানমন্ত্রী মোদি এক টুইট বার্তায় জানান কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে। সে রাজ্যের মানুষদের জন্য প্রার্থনা করছেন তিনি।
পেরিয়ার সহ কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে পারে বলে জানানো হয়েছে। কোচির বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। মেট্রো সেবা বন্ধ রয়েছে। বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জন্য বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
টিটিএন/এমএস