তুরস্কের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের
মার্কিন ধর্মযাজক অ্যান্ড্রিউ ব্রুনসনকে মুক্তি না দিলে তুরস্কের ওপর নতুন করে আরও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আনা হবে হবে হুমকি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
অ্যান্ড্রিউ ব্রুনসনকে প্রায় দু’বছর ধরে আটকে রেখেছে তুরস্ক। ২০১৬ সালের ৭ অক্টোবর ব্রুনসন এবং তার স্ত্রী নোরিনকে স্থানীয় থানা থেকে ডেকে পাঠানো হয়। তারা স্বেচ্ছায় সেখানে যান। কিন্তু মুক্তি দেয়ার বদলে তাদের দু’জনকেই পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়।
২০১৬ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যেপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টার পর যে ৫০ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে ব্রনসন এবং স্ত্রীও রয়েছেন।
আটকের কয়েকদিন পরে নোরিন ব্রনসনকে মুক্তি দেয়া হয়। তবে ডিসেম্বর মাসে ধর্মযাজক ব্রুনসনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে তুরস্ক। সেখানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে, তিনি সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য এবং তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
স্থানীয় কৌসুলিরা বলছেন, ব্রুনসনের সঙ্গে দু’টি গ্রুপের যোগাযোগ রয়েছে, যাদের সন্ত্রাসী বলে মনে করে তুরস্ক। অপরাধ প্রমাণিত হলে তার ৩৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, তিনি কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিকে (পিকেকে) সাহায্য করছেন। এই দলের নেতা ফেতুল্লাহ গুলেন। তাকেই ওই ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টার জন্য দায়ী করে আসছে তুরস্ক।
স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটার কারণে গত ২৫ জুলাই ব্রুনসনকে কারাবন্দীর বদলে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। এই সিদ্ধান্ততে ওয়াশিংটন স্বাগত জানালেও পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছে। ব্রুনসনকে মুক্তি না দেয়ায় সর্বশেষ গত ১ অগাস্ট তুরস্কের বিচার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে হোয়াইট হাউস।
সাম্প্রতিককালে যুক্তরাষ্ট্র আর তুরস্কের মধ্যে যে তিক্ত কূটনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়েছে তার মূলে রয়েছে ব্রুনসনের আটকের ঘটনা। কূটনৈতিক বৈরীতার কারণে দু’দেশ একে অন্যের পণ্যের ওপরও শুল্ক আরোপ করেছে।
এই পরিস্থিতি তুরস্ককে সংকটে ফেলেছে কারণ দেশটির নিজস্ব মুদ্রা লিরার মান কমে গেছে। গত জানুয়ারি থেকে ডলারের পরিবর্তে লিরার মান এক তৃতীয়াংশ ধস নেমেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান মার্কিন ইলেকট্রনিক পণ্য বর্জনের ডাক দেয়ার পাশাপাশি সে দেশ থেকে গাড়ি, তামাক, মদসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কের হার দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নেন। ফলে চলতি সপ্তাহে লিরার মান কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু সম্প্রতি তুরস্কের ওপর নতুন করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার মার্কিন রাজস্ব সচিব স্টিভেন মুচিন বলেন, তারা যদি ধর্মযাজন ব্রুনসনকে ছেড়ে না দেয় তবে আমাদের আরও কিছু করার পরিকল্পনা আছে।
এক টুইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তুরস্ক বহু বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সুবিধা গ্রহণ করে আসছে আর তারা ব্রুনসনকে জিম্মি করে রেখেছে।
টিটিএন/পিআর