কেনিয়ায় নারীবেশে পুরুষদের গোপন জীবন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৩৬ এএম, ১৪ আগস্ট ২০১৮

কেনিয়ায় সমকামী বিরোধী আইন অত্যন্ত কড়া। আর সে কারণে সমকামীদের যথেষ্ট কঠিন পরিস্থিতিতেই থাকতে হয়। সামাজিকভাবেও মাঝে মধ্যেই নিগ্রহের মধ্য পড়তে হয় তাদের।

কিন্তু এর মধ্যেই দেশটিতে এমন অনেকে আছেন যারা পুরুষ হয়েও নারীর রূপ ধারণ করে পুরুষদেরই আনন্দ দিতে পছন্দ করেন। গোপনে নানা আয়োজন হয়ে থাকে তাদের নিয়ে।

এ বিষয়ে আগ্রহ আছে এমন একজন বলেন, আমি আসলে কেনিয়ায় এই রানীদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমরা সেখানে গিয়েছি এবং তারাও জানে যে আমরা আছি কিন্তু সমস্যা হলো তাদের স্বীকার করা হয়না।

এখানে যাদের কথা বলা হচ্ছে তারা হলো ড্র্যাগ কুইন অর্থাৎ যেসব সমকামী পুরুষরা বিপরীত লিঙ্গের পোশাক পরিধান করেন। কেনিয়ায় এমন অনেক তরুণ সমকামী যুবককে নিয়ে গোপনে পার্টির আয়োজন করা হয়।

তারা সেখানে মেয়েদের মতো করে হাঁটেন বা তাদের কার্যক্রম হয় অনেকটা মেয়েদের মতো। দেশটিতে ভিন্ন লিঙ্গের পোশাক পরিধান অবৈধ নয় কিন্তু সেখানে সমকামী বিরোধী আইন যথেষ্ঠ কড়া।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেকেই এজন্য শাস্তি পেয়েছেন। অনেকেই ১৪ বছর পর্যন্ত জেলও খেটেছেন। কেনিয়ার বেশিরভাগ মানুষই সমকাম বিরোধী। এমনকি কেউ যদি বুঝতে পারে যে আপনি পুরুষ হয়ে নারীর পোশাক পড়েছেন তাহলে মারধরও করা হয়। কেউ হয়তো প্রশ্ন করবে তোমার বাবা-মা নেই? যদি আপনি না বলেন তাহলে হুমকি শুরু হবে এবং আপনাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য শর্ত হিসেবে চাঁদাও চাইবে।

বেশির ভাগ মানুষেরই ধারনা এটি যৌনকর্ম বা এরা শুধু নিজেকে প্রকাশ করতে চায় এমন কিছু। এদের নিতান্তই যৌনকর্মী মনে করেন বহু মানুষ।

যেসব সমকামী পুরুষরা এটি করছেন তারা মনে করেন এটি তাদের মেধার ও বৈচিত্র্যতার বহিঃপ্রকাশ। যদিও পরিবার ও সমাজে তাদের সহজভাবে নেয়া হয়না।

এক তরুণ বলেন, আমার পরিবার সম্পর্কে আমি কি বলতে পরি। আসলে তারা এখনো কিছুই জানেনা। আমি এমনভাবে হাঁটতে ভালোবাসি যেটা থেকে আমি অনুভব করি- হ্যাঁ, এটাই আমি। আর আমি যেখানে যাই লোকজন পছন্দ করে। তারা বলে যে, তুমি যা সেটাকেই আমরা সম্মান করি। তুমি এটা বেছে নাওনি বরং এভাবেই জন্ম নিয়েছেন।

তবে বাস্তবতা হলো দেশটিতে এ ধরনের মানুষ চরম বৈষম্য ও নিগ্রহের শিকার হয়ে থাকেন। নারীবেশে চলাফেরা করতে পছন্দ করেন এমন একজন বলেন, এটা বিবেচ্য নয় যে আমরা কারা, আমরা মানুষ। আর পোশাক দিয়ে আপনি কাউকে সংজ্ঞায়িত করতে পারেননা। আমরা চাই যে সাধারণ মানুষ এমনভাবে দেখুক যে এরা ভিন্ন এবং বিশেষভাবেই জন্মগ্রহণ করেছে। আর সেজন্যই আমাদের প্রতি বৈষম্য বন্ধ হওয়া উচিত।

তারা মনে করেন যৌন আচরণ দ্বারাও কাউকে চিহ্নিত করা উচিত নয়। তাদের বিশ্বাস এটি নিশ্চিত হলেই মানুষ হিসেবে তাদের অধিকার যেমন প্রতিষ্ঠিত হবে তেমনি দুর হবে সামাজিক সমস্যাগুলোও।

টিটিএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।