ইরানের ওপর মার্কিন পদক্ষেপ মনস্তাত্বিক যুদ্ধ
ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ঘোষণার নিন্দা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। এই পদক্ষেপকে মনস্তাত্বিক যুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার পর ইরানের ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই নিষেধাজ্ঞার শর্ত ভঙ্গ করা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মারাত্মক পরিণামের সম্মুখীন হবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তবে এই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একই সঙ্গে তারা বৈধ ব্যসা রক্ষার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
মূলত ইরানের মোটরযান খাতসহ স্বর্ণ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ধাতুর রফতানি বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে গঠন করা এই নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হবে মঙ্গলবার সকাল থেকে।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির অংশ হিসেবে থাকা যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি এই মার্কিন সিদ্ধান্তে গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছে। সব পক্ষকে চুক্তির প্রতিশ্রুতি মেনে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করেছে তারা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাক্ষর করা এক নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী ইরান সরকারের মার্কিন ডলার কেনা বা সংগ্রহ, স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু কেনাবেচার ক্ষেত্রে গ্রাফাইট, অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল, কয়লা ও শিল্প কারখানার কাজে ব্যবহৃত সফটওয়্যারের আমদানি, ইরানি রিয়াল-সংক্রান্ত লেনদেন, ইরানের সার্বভৌম ঋণ খাত, মোটরযান খাত, বন্দর কার্যক্রম, জ্বালানি, জাহাজ ও জাহাজ নির্মাণ-সংক্রান্ত খাত, পেট্রোলিয়াম বা জ্বালানি তেল-সংক্রান্ত লেনদেন ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বিদেশি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আমরা আশা করব সব রাষ্ট্র এমন পদক্ষেপ নেবে যার ফলে ইরানের সামনে যে কোনো একটি পথ খোলা থাকে- হয় তারা বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করা ও বিশ্বের জন্য হুমকিস্বরূপ কার্যক্রম বন্ধে করে বিশ্বের অর্থনীতির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করবে অথবা সারা বিশ্ব থেকে অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, পরমাণু চুক্তি বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন ইরানের সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করতে কি ধরনের আইন রয়েছে সেটিও উল্লেখ করা হয় ওই বিবৃতিতে। ট্রাম্প প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এক বক্তব্যে জানান, মে মাসে পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে আসার পর এরই মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরান। ইরানের মুদ্রা রিয়ালে প্রায় ৮০ শতাংশ মূল্যহ্রাস হয়েছে।
টিটিএন/এমএস