এশিয়ায় দুই-তৃতীয়াংশ শিশু মাতৃদুগ্ধ থেকে বঞ্চিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:১৫ পিএম, ০১ আগস্ট ২০১৮

সন্তান জন্ম দেয়ার পরবর্তী একঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় নবজাতককে বুকের দুধ পান করাতে না পারলে নবজাতকের জন্য তা প্রাণহানীর কারণ হতে পারে। জানা গেছে, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া দেশের পাঁচ জনের মধ্যে তিন জন শিশুই (আনুমানিক ৭ কোটি ৮০ লাখ শিশু) জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মাতৃদুগ্ধ পানের সুযোগ পায় না। তবে দক্ষিণ ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে ঠিক সময়ে স্তন্যপানের রীতি অধিক প্রচলিত।

সে দিক থেকে অনেক পিছিয়ে এশিয়ার দেশগুলো। মাত্র ৩২ শতাংশ (অর্থাৎ প্রতি তিনজনে দুইজন বঞ্চিত) শিশু জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মাতৃদুগ্ধ পানের সুযোগ পায়। যার জেরে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এমনকি, তৈরি হয় প্রাণ সংশয়ও।

স্তন্যপান নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই প্রতিবেদন যথেষ্ট উদ্বেগজনক। শিশুর জন্মের পরের এক ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাতৃদুগ্ধই হল প্রথম টিকা। সেটা দেরিতে পেলে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর জন্মের সময় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা জরুরি। অথচ হাসপাতালে সন্তান প্রসবের পরে মায়ের কী ধরনের যত্ন নিতে হবে, সে নিয়ে কোনো কর্মশালা হয় না। স্বাস্থ্যকর্মীরাও শিশুদের স্তন্যপানের দিকে অনেক সময়ে গুরুত্ব দেন না। সেই দিকগুলোতে নজরদারি প্রয়োজন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জন্মের পরপরই নবজাতককে দুধ পান করানো হলে নবজাতক ও মায়ের শরীরের মধ্যে ‘স্কিন টু স্কিন’ সংযোগ তৈরি হয়, যা মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে সহায়ক। শালদুধ নবজাতকের জন্য প্রথম ভ্যাকসিন হিসেবে কাজ করে। কারণ, শালদুধে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিবডি ও তা পুষ্টিতে সমৃদ্ধ।

‘সন্তান জন্মের প্রথম ঘণ্টার মধ্যে নবজাতককে বুকের দুধ পান করানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সময়টায় সবকিছু। এ সময় নবজাতককে দুধ পান করানোর ক্ষেত্রে বিলম্ব নবজাতকের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। অথচ প্রতিবছর লাখ লাখ শিশু এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’ জানান জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফের প্রধান নির্বাহী হেনরিয়েটা এইচ ফোয়ের।

তিনি বলেন, ‘মায়েরা সন্তান জন্মদানের পরপর এ বিষয়ে যথেষ্ট সহযোগিতা পান না। এমনকি স্বাস্থ্যকর্মীরাও সেভাবে সহযাগিতা করে না।’ তবে এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সবাই এগিয়ে আসলে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে বলে মনে করেন হেনরিয়েটা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সন্তান জন্মের পরবর্তী এক ঘণ্টার মধ্যে নবজাতককে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর হার সবচেয়ে বেশি পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকায় (৬৫ শতাংশ)। সবচেয়ে কম পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে (৩২ শতাংশ)।

বুরুন্ডি, শ্রীলঙ্কা ও ভানুয়াতুতে সন্তান জন্মের প্রথম ঘণ্টায় প্রতি দশজনের নয়জন শিশু মাতৃদুগ্ধ পানের সুযোগ পায়। অপরদিকে, আজারবাইজান, চাঁদ ও মন্টেনিগ্রোতে প্রতি দশজনে মাত্র দুইজন শিশু এ সুযোগ পেয়ে থাকে।

সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।