পাক নির্বাচনে কলকাঠি নাড়ছে সেনাবাহিনী?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:১৫ পিএম, ১৯ জুলাই ২০১৮

পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করছে বলে দেশটির ইংরেজি দৈনিক ডনের প্রধান মন্তব্য করেছেন। তার এই মন্তব্য ঘিরে দেশটিতে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে ডন’র প্রধানের সঙ্গে বিবিসির একটি সাক্ষাৎকার প্রচারের পর এই বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে।

ডন গ্রুপের প্রধান নির্বাহী হামিদ হারুন অভিযোগ করেছেন, দেশটির সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে। সেনাবাহিনী সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান এবং তার দল পিটিআইকে সাহায্য করছে। বিবিসির হার্ড-টক অনুষ্ঠানে দেয়া এই সাক্ষাতকার প্রকাশের পর বলা হচ্ছে, হারুন এবং তার পত্রিকা দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সমর্থনে পক্ষপাতিত্ব করেছে, এবং ইমরান খানের বিপক্ষে অবস্থান করেছিল।

পাকিস্তানে ২৫ জুলাই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কলকাঠি নাড়ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনের আগে যেসব পত্রিকা সেন্সরশিপের এবং হুমকির মধ্যে রয়েছে ডন পত্রিকা সেগুলোর মধ্যে একটি।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ দফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর জোর দিয়ে বলেছেন, আগামী ২৫ জুলাইয়ের নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে তাতে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ কোনো ভূমিকা থাকবে না। চলতি মাসের শুরুর দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছিলেন সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা। তখন অনেকেই অভিযোগ তুলেছিলেন, নির্বাচনে কলকাঠি নাড়ছে সেনাবাহিনী।

সোমবার প্রচারিত ওই সাক্ষাৎকারে হারুন অভিযোগ করেন, দেশটির শক্তিশালী সেনাবাহিনী সংবাদমাধ্যমের জন্য একটা অভূতপূর্ব আক্রমণ। তিনি অল পাকিস্তান নিউজপেপারস সোসাইটির সভাপতি।

১৯৪৭ সালের পর থেকেই দেশটির রাজনীতিতে অহরহ হস্তক্ষেপ করেছে সেনাবাহিনী। দেশটিতে সামরিক এবং বেসামরিক সরকারের কাছে বারবার ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে। তবে সেনাবাহিনী আগামী নির্বাচনে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

হারুন বলেছেন, আমি মনে করি এই পর্যায়ে মনে হচ্ছে দ্বিতীয় সারির নেতার সাথে যুক্ত হয়ে জোট সরকার গঠনের প্রচেষ্টা হচ্ছে যেটা ডিপ স্টেট এর পরিচালনায় চলবে। এই সাক্ষাৎকার নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। টুইটারে ইমরান খান বলেছেন, তার দলের বিরুদ্ধে ডন পত্রিকার ভয়ানক বিরুদ্ধাচরণ করেছে।

অন্যরা বলছেন, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার আগে হারুনের কাছে শক্ত তথ্য-প্রমাণ থাকা উচিত ছিল। তবে হারুনের পক্ষে কিছু সাংবাদিক এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারকারীরা কথা বলছেন।

এদিকে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলায় দেশটির তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে। তারা বলেছেন, পাক রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে নওয়াজ শরিফ প্রায়ই কথা বলতেন। সেনাবাহিনী নওয়াজের এ বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি; যে কারণে তাকে দুর্নীতির দায়ে দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ অভিযোগ করে বলছে, বিচারবিভাগের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে সেনাবাহিনীর। দুর্নীতির মামলায় নওয়াজ ও তার মেয়ের সাজায় হাত রয়েছে সামরিক কর্মকর্তাদের। তবে পাকিস্তানের নির্বাচন ও নওয়াজের দুর্নীতির মামলায় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ এবং কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে সেনাবাহিনী।

সূত্র : বিবিসি, ডন।

এসআইএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।