অবিশ্বাস্য সাহসী এবং শক্ত এই থাই শিশুরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৩৯ পিএম, ১০ জুলাই ২০১৮

থাইল্যান্ডের গুহায় আটকে পড়া ১২ জন কিশোরকে বের করে আনার কাজে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যেসব বিদেশি বিশেষজ্ঞ ডুবুরিরা অংশ নিচ্ছেন, তাদের একজন ইভান কারাজিচ।

ডেনমার্কের এই বিশেষজ্ঞ ডুবুরি থাইল্যান্ডেরই কো-তাও নামে ছোটে একটি দ্বীপে একটি গুহার ভেতরে ডাইভিং বা ডুব সাঁতার দেওয়ার একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালান। চিয়াং রাইয়ের পাহাড়ের গুহায় কিশোর ফুটবল দলটির আটকে পড়ার খবর প্রচার হওয়ার পর অন্য নানা দেশের অনেক স্বেচ্ছাসেবী ডুবুরির মতো তিনিও ছুটে গিয়ে যোগ দেন উদ্ধারকারী দলে।

বিবিসির সঙ্গে তার গত কদিনের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কারাজিচ আটকে পড়া থাই শিশু-কিশোরদের, যাদের অধিকাংশ সাঁতারই জানতো না, সাহসের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

এই বাচ্চাগুলোকে এমন কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা আগে কখনো এই বয়সের কোনো শিশুই হয়তো করেনি...১১ বছর বয়সে কেভ ডাইভিং (গুহার ভেতরে ডুব সাঁতার) চিন্তারও বাইরে।

কারাজিচ বলেন, সরু গুহায় ভারি অক্সিজেনের পাত্র পিঠে নিয়ে মাস্ক পরে ডুব সাঁতার দেওয়া যে কোনো বয়সের মানুষের জন্য বিপজ্জনক। যখন তখন বিপদ আসতে পারে, নিজের টর্চের আলো ছাড়া সবকিছু অন্ধকার।

কারাজিচ বলেন, উদ্ধারের পরিকল্পনার সময় তাদের সবচেয়ে ভয় ছিল বাচ্চাগুলো যদি মাঝপথে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, তখন কীভাবে তা সামাল দেয়া যাবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে আটজনকে বের করে নেওয়া হয়েছে তাদের তেমন কোনো বিপদের কথা উদ্ধারকারীদের কাছ থেকে শোনা যায়নি।

আমি বিশ্বাসই করতে পারিনা যে এই বাচ্চাগুলো কতটা সাহসী এবং ঠান্ডা মাথার হতে পারে, ভাবতেই পারছি না... দু সপ্তাহ ধরে ঠান্ডা, অন্ধকার গুহার আটকে ছিল তারা, মাকে দেখেনি...।

ইভান কারাজিচের দায়িত্ব- গুহার মাঝামাঝি পথে অবস্থান নিয়ে অক্সিজেন-ভর্তি পাত্র পরীক্ষা করে বদলে দেয়া। রোববার প্রথম বাচ্চাটিকে তিনি যখন আসতে দেখেন, অনুভূতি কী ছিল তার?

মনে মনে অনেক আশঙ্কা ছিল আমার। ৫০ মিটারের মতো দূরে প্রথম যখন একজন ডুবুরি এবং তার পেছনে বাচ্চাটি নজরে এলো, আমি তখনও নিশ্চিত ছিলাম না যে বাচ্চাটি বেঁচে আছে কিনা। যখন দেখলাম সে শ্বাস নিচ্ছে, বেঁচে আছে, দারুণ স্বস্তি পেয়েছিলাম।

নাস্তায় চকলেট চেয়েছে তারা
মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারাও স্বস্তি প্রকাশ করছেন বের করে আনা আটটি শিশুই ভালো আছে। স্বাস্থ্য সচিব জেটাসাদা চোকেদামরংসুক বলেছেন, তারা নিজেরাই সবকিছু করতে পারছে। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সকালে কয়েকজন নাস্তার জন্য চকলেট-রুটি খেতে চেয়েছে।

সোমবার কয়েকজন বাসিল পাতা এবং মাংস দিয়ে তৈরি ফ্রাইড রাইস খেতে চেয়েছে। বিবিসির এক সংবাদদাতা টুইট করেছেন, বলাই বাহুল্য, এই শিশুরা অসামান্য, অসাধারণ।

বিশ্বকাপের অতিথি
এই সাহসী কিশোর ফুটবল দলটিকে মস্কোতে বিশ্বকাপের ফাইনালে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ফিফা। কিন্তু থাই চিকিৎসকরা জানিয়েছে, নানা পরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণের জন্য কম করে হলেও এক সপ্তাহ তাদের হাসপাতালে থাকতে হবে। তার অর্থ রোববারের ফাইনাল হয়তো তাদের হাসপাতালে টিভিতে দেখতে হবে।

বিবিসির নিক বিক মজা করে ফিফাকে উদ্দেশ্য করে টুইট করেছেন, ২০২২ সালের বিশ্বকাপে যেন তাদের বিশেষ অতিথি করে নিয়ে যাওয়া হয়। ফিফার সাড়া অবশ্য এখনও মেলেনি। বিবিসি বাংলা।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।