ফরেনসিক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতনের প্রমাণ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গুলি করে হত্যা, জখম, নির্যাতন, ধর্ষণ এবং বিস্ফোরণের কারণে আহত হওয়ার যে বিবরণ পাওয়া গেছে ফরেনসিক রিপোর্টেও তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া শিবিরে আহত রোহিঙ্গাদের যেসব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সেবা দিচ্ছেন তাদের কাছ থেকেই এসব তথ্য পাওয়া গেছে। খবর রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মানবাধিকার চিকিৎসকদের (পিএইচআর) প্রতিবেদনটি জুলাইয়ের শেষ দিকে প্রকাশ করা হবে। ওই রিপোর্টটি ইতোমধ্যেই হাতে পেয়েছে রয়টার্স।
নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের দেয়া বিবরণকে সমর্থন করে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের এটাই প্রথম বড় কোনো উদ্যোগ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পিএইচআর বিশ্বব্যাপী বড় বড় নৃশংস ঘটনাগুলোর তদন্ত করে আসছে। এর আগে ১৯৯৭ সালে স্থলে মাইনে আহতদের নিয়ে কাজ করে সংস্থাটি অংশীদারের ভিত্তিতে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারও পেয়েছে।
পিএইচআরের প্রতিবেদনে চুট পিন নামের একটি গ্রাম থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের আলোকপাত করা হয়েছে। ওই গ্রামটি থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মিয়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনী গ্রামের বেসামরিক নাগরিকদের নির্বিচারে গুলি করেছে, নারীদের ধর্ষণ, বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের মতে গ্রামের কয়েকশ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
এ প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে মিয়ানমারের কর্মকর্তারা বলেছেন, বাঙালি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনী বৈধ অভিযান চালিয়েছে। সব ধরনের নৃশংসতার অভিযোগও অস্বীকার করেছে তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পালিয়ে বেঁচে আসা ২৫ শরণার্থীকে পরীক্ষা করেছে পিএইচআর। এদের মধ্যে ২২ জনের শরীরেই জখমের চিহ্ন ছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে ১৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন, পাঁচজনের শরীরে মারধর ও লাথি এবং চাবুকের আঘাত ছিল। এছাড়া তিনজন বিস্ফোরণ ও অগ্নিদগ্ধে আহত হয়েছেন, তিনজনের দেহে ছুরিকাঘাতসহ ধারালো অস্ত্রের জখম ছিল এবং দু’জন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
পিএইচআর বলছে, সব ধরনের ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মেডিকেল নথির সঙ্গে নির্যাতনের শিকার হওয়া রোহিঙ্গাদের দেয়া বিবরণ মিলে গেছে।
টিটিএন/এমএস