ক্যাশ কাউন্টার ছাড়াই কেনাকাটা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:০০ পিএম, ৩০ জুন ২০১৮

ব্রিটেনসহ বিভিন্ন দেশে গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের পছন্দের সুপারস্টোরগুলোর মধ্যে একটি টেসকো। সম্প্রতি তারা কেনাকাটাকে আরো সহজ করে তুলতে একটি অভিনব পদ্ধতির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছে। যেখানে কেনাকাটা করতে গ্রাহকদের আর ক্যাশ কাউন্টারে যেতে হয় না।

এজন্য যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় এই খুচরা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানটি তাদের কয়েকজন কর্মচারীদের স্মার্টফোনে একটি বিশেষ ধরণের অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করে দেয়। নির্দেশনা ছিল তারা যেন টেসকোর সদর দফতরের একটি স্টোরে এই অ্যাপটি ব্যবহার করে।

মূলত এই অ্যাপের সাহায্যে তারা ক্রেতাদের প্রয়োজনীয় পণ্যের বারকোড স্ক্যান করে পেমেন্ট নেয়। এতে ক্যাশ রেজিস্ট্রার যন্ত্রের কোন প্রয়োজন হয়না। আর এই অ্যাপটি তৈরি করেছে কো-অপ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তবে অ্যামাজান এরই মধ্যে এই প্রযুক্তির সাহায্যে সিয়েটলে একটি চেক আউট ফ্রি গ্রোসারি স্টোর চালু করেছে। তবে টেসকো জানিয়েছে, তাদের এই পরীক্ষা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

তবে এই প্রযুক্তির আশঙ্কার দিকটি হল, এসব চেক আউট ফ্রি স্টোরগুলোয় ক্রেতাদের আলাদা করে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক ছিচকে চোর এর সুযোগ নিয়ে লুটপাট করতে পারে। এছাড়া এই পদ্ধতিতে মুনাফা খুব সীমিত হওয়ায় প্রযুক্তিটি আদৌ কতোটুকু গ্রহণযোগ্য হবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

টেসকোর প্রধান নির্বাহী ডেভ লুইস জানান, যদি ব্যবসা থেকে মুনাফার পরিমাণ দুই থেকে তিন শতাংশ হয়। তাহলে সেই ব্যবসা করা না করা একই কথা। তবে টেসকোর আকারের স্টোরগুলোয় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলে সেটা চেক আউট মুক্ত কেনাকাটার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে।

বর্তমানে ব্রিটেনের ম্যানচেস্টার শহরের একটি স্টোরে প্রযুক্তিটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার হচ্ছে। কিছুদিন পরেই অন্যান্য স্টোরগুলোতে এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরুর কথা রয়েছে। এ ব্যাপারে খুচরা বাজার ব্যবস্থা পর্যবেক্ষক স্টিভ ড্রেসার বলেন, এই চেক আউটমুক্ত স্টোরগুলোয় সম্প্রতি যে হারে চুরির ঘটনা ঘটছে খুচরা ব্যবসায় এমনটা গত ১০ বছর ধরেই চলছে।

তবে চেক আউট মুক্ত স্টোরগুলো থেকে যে আয় হয় সেটায় যদি এই চুরির ব্যয় যুক্ত হয় তাহলে ব্যবসা কেমন চলবে সেটা নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে। তবে ক্রেতারা সবসময়ই বাড়তি ঝামেলা এড়িয়ে যেতে চান। সেক্ষেত্রে তারা হয়তো এই প্রযুক্তিকে সাদরেই গ্রহণ করবে। তবে সিয়াটলের আমাজন স্টোরটি পেমেন্টের ক্ষেত্রে আরও উন্নত পদ্ধতি ব্যবহার করেছে।

এজন্য তারা তৈরি করেছে অ্যামাজন গো নামের একটি বিশেষায়িত অ্যাপ। আমাজন স্টোরে প্রবেশ থেকে শুরু করে কেনাকাটা এমনকি বেরিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় এই অ্যাপের। ক্রেতারা শুধু তাদের অ্যাপযুক্ত স্মার্টফোনটি সোয়াইপ করার মাধ্যমে স্টোরে প্রবেশ করে।

স্টোরটিতে রয়েছে শত শত মাউন্ট করা ক্যামেরা এবং ইলেকট্রনিক সেন্সর। যার সাহায্যে প্রতিটি গ্রাহককে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়।

তেমনি তারা স্টোর থেকে কোন পণ্যগুলো নির্বাচন করছে সেটাও তারা মনিটর করতে পারে। গ্রাহকরা শুধু পছন্দের পণ্যটি তাদের শপিং ব্যাগের মধ্যে ভরে নেন। কেনাকাটা শেষ হলে আগের মতোই স্মার্টফোন সোয়াইপ করে বেরিয়ে যান। অ্যামাজন স্টোরে স্মার্টফোন সোয়াইপ করার মাধ্যমে প্রবেশ করতে হয়।

বেরিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ক্রেতারা যতো পণ্য ব্যাগে রেখেছেন সেটা ক্যামেরা ও সেন্সরের মাধ্যমে তালিকা করা হয়।
বেরিয়ে যাওয়ার পর ক্রেতার ক্রেডিট কার্ড থেকে পণ্যের বিল কেটে রাখা হয়। এছাড়া ওয়েলউইন গার্ডেনসিটিতে টেসকোর সদর দফতরের স্টোরটিও চলে নগদ লেনদেন ছাড়া।

এতে চেক আউটের সময় প্রতি ক্রেতা বাবদ গড়ে ৪৫ সেকেন্ড কমে গেছে বলে দাবি টেসকোর। দেখা গেছে, টেসকোর আকারের স্টোরগুলোতে ক্রেতাদের চেক আউটের সময় অর্থ লেনদেন বাবদ জনপ্রতি ৯০ সেকেন্ডের প্রয়োজন হয়।

টিটিএন/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।