এ ঠেলাঠেলির শেষ কোথায়?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৩২ পিএম, ২৫ জুন ২০১৮

মূলত আফ্রিকান শরণার্থী তারা। চোখ ভরা ইউরোপের স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছেড়ে নৌকায় সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছেন। উত্তাল সমুদ্র পেরিয়ে ইউরোপের কোনো দেশে তারা পৌঁছে গেলে শুরু হয় নতুন সঙ্কট। কে নেবে তাদের?

সাগরে ভাসমান এ শরণার্থীদের নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের ঠেলাঠেলির চলছে বহুদিন ধরেই। তারপরও বিষয়টার সমাধানে রোববার বসেছিলেন ইইউয়ের ২৮ নেতার ১৬ জন। শরণার্থীরা ইতালি বা অন্য কোনো ইউরোপীয় দেশে পৌঁছানোর পর কে তাদের দায়িত্ব নেবে তা নির্ধারণেই ব্রাসেলসে এই জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন তারা।

নিজের দেশে সংঘর্ষ, নিপীড়ন থেকে পালিয়ে ইউরোপে ঢুকতে গিয়ে সাম্প্রতিক বছলগুলোতে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরেছেন বহু শরণার্থী।

এদিকে শরণার্থীদের স্রোত নিজের দিকে একা আর নিতে চাচ্ছে না ইতালি। দেশটির নতুন সরকার ইইউয়ের অন্য দেশগুলোর কাছ থেকেও এখন আরও বেশি সহযোগিতা চায়। আর এ দাবিতেই তারা সাগর থেকে শরণার্থীদরে উদ্ধারকারী কয়েকটা জাহাজকে নিজেদের সীমানায় ভিড়তে দেয়নি।

২৩৯ আফ্রিকান শরণার্থী নিয়ে বন্দরে ভেড়ার অপেক্ষায় আছে লাইফলাইন নামে একটি জাহাজ। মাল্টা, ইতালি দু’টি দেশই জাহাজটিকে ভিড়তে দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এরআগে অ্যাকুয়ারিয়াস নামে একটি জাহাজকেও একই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল। বহু দর কষাকষির পর ওই জাহাজটি স্পেনের একটি বন্দরে নোঙর করে।

ইতালির কট্টোর ডানপন্থি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাতিও সালভিনি তো বিদেশি দাতব্য সংস্থাগুলোকে লিবিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের আর উদ্ধার না করতেই বলে দিয়েছেন।

এ সংস্থাগুলো মানুষ পাচারে উৎসাহ যোগাচ্ছে বলেও অভিযোগ তার।

রোববারের বৈঠকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জলা মের্কেল সমমনা নেতাদের নেয়ে কিছু একটা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। শরণার্থীদের ঢল কমাতে ও ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে তাদের বিষয়ে দায়িত্ব ভাগাভাগি নিয়েও কিছু একটা করতে চান তারা।

শরণার্থীদের নিয়ে এখনকার সমস্যাকে ‘রাজনৈতিক’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন ম্যাক্রোঁ।

ম্যাক্রোঁর এমন কথাবার্তা ভালোভাবে নেয়নি ইতালি। এ দেশটি চায় শরণার্থীদের দায়িত্ব সব দেশই যেন সমানভাবে নেয়।

অনেকে আশঙ্কা করছেন শরণার্থীদের আরেক দফা ঢলে ইউরোপের এক দেশ থেকে আরেক দেশে পাসপোর্টবিহীন চলাফেরার দিনে ইতি টানবে।

বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী চার্লস মাইকেল বলেছেস, সেনজেন এরিয়াতে আমরা যদি মুক্তভাবে চলাফেরা করতে চায় তবে আমাদের অবশ্যই ইউরোপের সীমান্তে কঠোর হতে হবে।

অভিবাসীদের নিয়ে যে সমস্যা রয়েছে তার পুরোটা সমাধান হয়ে যাবে বলে মনে করেন না মের্কেল। বরং নিজেদের সুবিধার্থে এক্ষেত্রে তিনি দ্বিপক্ষীয় বা ত্রিপক্ষীয় চুক্তির দিকে নজর দিচ্ছেন।

শরণার্থীদের নিজেদের দেশে ঠাঁই দেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ব্রাসেলসের এ বৈঠকে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকে হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক ও স্লোভাকিয়া।

উদ্ধারকারী জাহাজ ফিরিয়ে দিয়ে ইতালি দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো কাজ করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন ম্যাক্রোঁ।

সূত্র : আলজাজিরা।

এনএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।