কুয়েত দখলের হুমকি সৌদি আরবের
ইয়েমেনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার পর এবার সৌদি আরব কি আরেক রাজ-সরকার কুয়েতের সঙ্গেও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে? সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী সালমান কুয়েত দখল করে নেয়ার হুমকি দেয়ায় অনেকের মধ্যেই এই আশঙ্কা জোরদার হয়েছে।
‘খাফজি’ তেল-ক্ষেত্র নিয়ে মতবিরোধের প্রেক্ষাপটে সৌদি যুদ্ধমন্ত্রী মুহাম্মাদ বিন সালমান প্রতিবেশী দেশ কুয়েতের সঙ্গে যুদ্ধ করার হুমকি দিয়েছেন। ‘মিডলইস্ট প্যানারোমা’ গোয়েন্দা সূত্রগুলোর উদ্ধৃতি দিয়ে এই চাঞ্চল্যকর খবর দিয়েছে। খবর রেডিও তেহরান।
সালমান কুয়েত দখল করে নেয়ার হুমকি দিয়ে বলেছেন, কেবল খাফজি তেল-ক্ষেত্র নয়, গোটা কুয়েতই ঐতিহাসিক নানা দলিল-প্রমাণের ভিত্তিতে সৌদি ভূখণ্ডের অংশ। কুয়েত সরকার অভিযোগ করেছে যে, রিয়াদ খাফজি নামের অভিন্ন তেল-ক্ষেত্র বন্ধ করে রাখায় কুয়েত ব্যাপক ক্ষতির শিকার হচ্ছে এবং এ জন্য ভবিষ্যতে রিয়াদকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
খাফজি থেকে তেল উৎপাদনের কাজ শুরু করতে কুয়েতি তেলমন্ত্রী সৌদি তেলমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কুয়েতি দাবি মহা-ক্ষিপ্ত করেছে সৌদি যুদ্ধমন্ত্রী সালমানকে। তিনি বলেছেন, আমরা কুয়েতকে রক্ষা করেছিলাম সাদ্দামের থাবার হাত থেকে, আর এখন আমাদের থাবা থেকে কে তাদের রক্ষা করবে?
সালমান আরো বলেছেন, কুয়েত কোনো দিক থেকেই আমাদের চেয়ে এগিয়ে নেই এবং দেশটি এতো ক্ষুদ্র যে তা রিয়াদেরও চারভাগের একভাগের সমান।
কুয়েত বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক আদালতে তোলায় সৌদি আরবের তরুণ যুদ্ধমন্ত্রী আরো বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। খাফজি বন্ধ করে দেয়ার আগে সেখান থেকে প্রতিদিন প্রায় তিন লাখ ব্যারেল তেল ওঠানো হতো।
উল্লেখ্য, মার্কিন সরকারের সবুজ-সংকেত পেয়েই সাদ্দাম ১৯৯০ সালের দোসরা আগস্ট তেল-সমৃদ্ধ কুয়েত দখল করে নিয়েছিল। কিন্তু পরে মার্কিন সরকার কুয়েত উদ্ধারের নামে ইরাকের ওপর বহুজাতিক বাহিনী নিয়ে হামলা চালায় এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানির মুখে সাদ্দাম-বাহিনী কুয়েত থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়।
ইরানের ওপর সাদ্দামের চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের সময় সাদ্দাম সরকার কুয়েতের কাছ থেকে ব্যাপক ঋণ নিয়েছিল। কুয়েত এক পর্যায়ে ওই ঋণের অর্থ ফেরত দেয়ার দাবি জানালে অর্থ-সংকটের শিকার সাদ্দাম কুয়েত দখলের সিদ্ধান্ত নেয় ও এ ব্যাপারে মার্কিন সরকারের মতামত জানতে চায়।
মার্কিন সরকার তার রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে এ ব্যাপারে সাদ্দাম সরকারকে উৎসাহ যোগায় এবং সাদ্দামের ওই উদ্যোগের কোনো বিরোধিতা করবে না বলে জানিয়েছিল।
বিএ