নরওয়েতে অভিবাসীদের জন্য ধর্ষণ প্রতিরোধে ক্লাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:০৪ এএম, ০৭ জুন ২০১৮

নরওয়ের জনসংখ্যা ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ। এদের মধ্যে চার লাখ এশিয়া, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা অভিবাসী। নরওয়ের মতো একটি উদার পশ্চিমা সমাজে এসে নতুনভাবে জীবন শুরু করা তাদের অনেকের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। ফলে তাদের সার্বিক সহায়তার জন্য নরওয়ের উদ্যোগে বিশেষ ক্লাসের মাধ্যমে অনেক বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে, যাকে বলা হচ্ছে কালচারাল কোডিং ক্লাস।

এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে থেকে আসা চার লাখের বেশি অভিবাসীকে জায়গা দিয়েছে নরওয়ে। তাদের পূর্ণাঙ্গভাবে সহায়তার জন্য এই কালচারাল কোডিং ক্লাস করানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন মার্গারেট বার্গ । তিনি বলেন, এই কোর্সে গুরুত্ব দেয়া হয় নিরাপত্তার জন্য একদল নারীকে একতাবদ্ধ থাকার বিষয়টিকে। এখানকার মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা। কিন্তু ভিন্ন এক সংস্কৃতির মাঝে কিভাবে শিশুদের বড় করে তুলতে হয় সে বিষয়েও আমরা তাদের সচেতন করছি।

তিনি বলেন, এটা বেশ ভালো কাজ করছে। এই কোর্সের শেষে তাদের কাছে প্রশ্ন থাকে যে, অভিভাবক হিসেবে তাদেরকে সবচেয়ে বেশি হতাশ করবে কোন বিষয়টি? যদি আপনার মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয় সেটি? নাকি যদি আপনার ছেলেটি কাউকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হয় সেটি?

তিনি আরও বলেন, অনেক আলাপ আলোচনার পর আমরা যে বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছাই সেটি হল, এমন ক্ষেত্রে মেয়েটি হয় ঘটনার শিকার অর্থাৎ ভুক্তভোগী সে। কিন্তু ছেলে সন্তানটি যদি হামলাকারী হয় সেটি বাবা-মার জন্য বেশি হতাশাজনক।

সিরিয়া, ইরাক এবং ইথিওপিয়া থেকে আসা নারীরা এখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা দেখানো হচ্ছে তাদের। ইথিওপিয়া থেকে আসা অভিবাসী ওয়ারকিয়ে বলছিলেন এটি তাদেরকে কিভাবে সচেতন করছে।

তিনি বলেন, আজ আমি জানতে পারলাম যে আমার সাথে কোন কিছু ঘটলে কোথায়, কার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। সেই সাথে কেউ যৌন হয়রানির কিংবা ধর্ষণের শিকার হলে তাকে কিভাবে সাহায্য করতে হবে। এই ইস্যুতে এখন আমিও পারবো অন্য কাউকে শেখাতে।

আরেকজন অভিবাসী বেইমনেট বলেন, এখানে বিষয়টা হল কিভাবে আপনি আপনার বাচ্চাদের গড়ে তুলবেন সেটা জানার সুযোগ হচ্ছে। তাদের সঠিক পথে নির্দেশনা দেয়া, ছেলে এবং মেয়ে উভয়কে কিভাবে একজন যোগ্য অভিভাবক হয়ে উঠতে হয়, সেটা এখানে এসে জানতে পারলাম।

চার বছর আগে সিরিয়া থেকে শরণার্থী হয়ে এসেছেন মায়সাম এবং মোহাম্মদ। তারা এখন নরওয়ের ভাষায় কথা বলতে পারেন। ভালো চাকরি জুটেছে তাদের, সেইসাথে বেশকিছু বন্ধুও হয়েছে তাদের।

মায়সাম বলেন, যখন আমরা নরওয়েতে চলে এলাম, তখন এখানকার সরকারের কাছ থেকে বেশ ভালো সহায়তা পেয়েছি। দেশটি সম্পর্কে এবং এখানকার ভাষা সম্পর্কে বেশকিছু কোর্স করার সুযোগ হয়েছে। এই সিরীয় নারী অভিবাসী মনে করেন, এখানে যে ধরনের কোর্স হচ্ছে, মেয়েদের এ ধরনের সুযোগ দরকার যাতে করে তারা সহিংসতা এবং যৌন সহিংসতার বিষয়ে আরো জানতে পারে।

টিটিএন/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।