যে কারণে পদত্যাগে বাধ্য হলেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:২৮ পিএম, ০১ জুন ২০১৮

স্পেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন স্প্যানিশ স্যোসালিস্ট ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা পেদ্রো স্যাঞ্চেজ। শুক্রবার পার্লামেন্টের আস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হন দেশটির মধ্য-ডানপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতা মারিয়ানো রাজয়।

রাজয়ের রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি কেলেঙ্কারির অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। দল দুর্নীতিতে জড়িত অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সংসদে আস্থা ভোটের প্রস্তাব আনেন স্প্যানিশ স্যোসালিস্ট ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা পেদ্রো।

শুক্রবার তার ওই প্রস্তাবের পক্ষে ১৮০ ও বিপক্ষে ১৬৯ সংসদ সদস্য ভোট দিয়েছেন। ভোটদান থেকে বিরত রয়েছেন এক সংসদ সদস্য।

পেদ্রো স্যাঞ্চেজ আগামী সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া আগামী সপ্তাহে তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়োগ করা হতে পারে।

পার্লামেন্টে শুক্রবারের ভোটাভুটির আগে পেদ্রো বলেন, আমাদের দেশের ইতিহাসে নতুন একটি অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছি। আধুনিক স্পেনের ইতিহাসে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে গেলেন মারিয়ানো রাজয়।

দেশটির রক্ষণশীল রাজনৈতিক দল পিপলস পার্টির এই নেতা ২০১১ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার পেদ্রো স্যাঞ্চেজ বলেন, ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পার্লামেন্টের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করবেন।

তবে ৩৫০ সদস্যের স্পেনের পার্লামেন্টে পেদ্রোর দলের মাত্র ৮৪ সংসদ সদস্য থাকায় কীভাবে তিনি এই দীর্ঘ সময় ধরে প্রশাসন পরিচালনা করবেন তা এখনো পরিষ্কার নয়।

স্পেনের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি পেদ্রো স্যাঞ্চেজ ইউরোপপন্থী হিসেবে পরিচিত। এর ফলে দেশটিতে ইতালির মতো রাজনৈতিক সংকট তৈরি হওয়ার শঙ্কা সামান্য বলে বলছেন বিনিয়োগকারীরা।

আস্থা ভোটের নেপথ্যে

পেদ্রো স্যাঞ্চেজ বলেছেন, কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া নিজের রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হয়েছেন রাজয় (৬৩)। রাজয়ের দল পিপলস পার্টির সাবেক এক কোষাধক্ষের দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। এই দণ্ডের জেরে গত সপ্তাহে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয় পিপলস পার্টি।

মাদ্রিদের হাইকোর্ট পিপলস পার্টির সাবেক কোষাধক্ষ লুইস বার্সেনাসকে ঘুষ, অর্থপাচার ও কর ফাঁকির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেন। ঐতিহ্যবাহী মধ্য-ডানপন্থী পিপলস পার্টির দুর্নীতি কেলেঙ্কারির এ খবরে দেশটির অনেক ভোটার ক্ষুব্ধ।

স্পেনে কী ঘটবে এখন?

রাজয়ের বিদায়ের ফলে ইউরোপের চতুর্থ বৃহৎ অর্থনীতির দেশ স্পেনে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। স্যাঞ্চেজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর শপথ নিতে পারেন।

এছাড়া আগামী সপ্তাহে তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। স্প্যানিশ স্যোসালিস্ট ওয়ার্কার্স পার্টির প্রধান হলেও পেদ্রো স্যাঞ্চেজ দেশটির পার্লামেন্টের নির্বাচিত সদস্য নন।

পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে মাত্র ৮৪ প্রতিনিধি নিয়ে আইন পাসের ক্ষেত্রে রীতিমতো লড়াই করতে হবে পেদ্রোকে। তবে চড়াই-উতরাই কাটাতে পার্লামেন্টের ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট বাঁধতে পারেন তিনি।

সূত্র : এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।