সেনাবাহিনীকে ১৫ দিনের মধ্যে ইরানে হামলার নির্দেশ দেন নেতানিয়াহু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৩৩ পিএম, ৩১ মে ২০১৮

১৫ দিনের মধ্যে ইরানে হামলা চালাতে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি গোয়েন্দাসংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান তামির পারদো এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইরানে হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নেয়ার এ নির্দেশ নেতানিয়াহু দিয়েছিলেন ২০১১ সালে।

২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোসাদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তামির পারদো। ইসরায়েলের টেলিভিশন চ্যানেল কেশেত টিভির অনুসন্ধানমূলক অনুষ্ঠান ‘উভদা’য় তিনি বলেছেন, ‘হামলা প্রস্তুতির এই নির্দেশ মহড়ার জন্য দেয়া হয়নি।’ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টেলিভিশন চ্যানেলটির বিশেষ এই অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে।

তামির পারদো বলেন, ‘যখন প্রধানমন্ত্রী আপনাকে ক্ষণ-গণনার প্রক্রিয়া শুরু করতে বলবেন, তখন আপনাকে ভাবতে হবে যে, তিনি আপনার সঙ্গে নিছক মজা করছেন না। এসব বিষয়ের সাঙ্ঘাতিক অর্থ রয়েছে।’ তবে পারদোর এই দাবির ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বুধবার নেতানিয়াহু বলেন, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রধারী হতে দেবে না ইসরায়েল। শুধুমাত্র গোলান মালভূমির বিপরীত দিকে এবং সিরিয়ায় আমাদের আশ-পাশেই নয় বরং পুরো সিরিয়ার কোথাও সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে দেয়া হবে না ইরানকে।

পারদো এমন এক সময় তেহরানে হামলা চালাতে নেতানিয়াহুর নির্দেশের তথ্য ফাঁস করলেন যখন সিরিয়ায় এ দুই দেশ ছায়াযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। চলতি মাসে সিরিয়ায় ইরানের সামরিক অবস্থানে পুরোদমে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল; এর পরিণতি মারাত্মক হবে বলে ইসরায়েলকে হুমকি দেয় ইরান।

ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত গোলান মালভূমিতে ইরানের একটি রকেট ঢুকে পড়ার অভিযোগে ইরানের সামরিক স্থাপনায় ওই হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ইরানের বেশ কয়েকজন যোদ্ধা নিহত হয়।

গত ফেব্রুয়ারিতে ইসরায়েলি আকাশসীমায় ইরানের একটি ড্রোন ঢুকে পড়ায় সেটিতে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করে তেলআবিব। সিরিয়ায় বিমানবিরোধী স্থাপনায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দুই পক্ষের এই লড়াইয়ের সময় ইসরায়েলি একটি যুদ্ধবিমান গুলিতে ভূপাতিত হয়।

ইসরায়েল বারবার সতর্ক করে দিয়ে বলছে, সিরিয়ায় ইরানের উপস্থিতিকে তারা হুমকি হিসেবে দেখে আসছে। সিরিয়ার ভেতরে ইরানের সামরিক বাহিনী ও মিলিশিয়াদের উপস্থিতিকে সমস্যা মনে করে দেশটি। ইরানের দীর্ঘদিনের কট্টর সমালোচক নেতানিয়াহুর অভিযোগ, পারমাণবিক অস্ত্র ও দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে তেহরান।

ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক ২০১১ সালে নেতানিয়াহুর আমলে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ এবং ২০১১ সালেই নেতানিয়াহু ইরানে বোমা হামলা চালাতে চেয়েছিলেন বলে কিছুদিন আগে দাবি করেছিলেন এহুদ। কিন্তু তার এই দাবির বিরোধীতা করেন ইসরায়েলের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

পারদো বলেছেন, ‘নির্দেশ পাওয়ার পর আমার আইনি উপদেষ্ঠাদের কাছে আমার কাজের পরিধি সম্পর্কে পরামর্শ নিয়েছিলাম। যুদ্ধ শুরুর নির্দেশ দেয়ার জন্য কার অনুমতি প্রয়োজন সেটা জানার জন্য আমি প্রত্যেকের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করেছি।’

নেতানিয়াহুর ওই নির্দেশের পর কী ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা পরিষ্কার নয়। তবে ২০১১ সালে ইরানে হামলা চালায়নি ইসরায়েল। ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্ব শক্তির ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে সম্প্রতি সমালোচনার মাত্রা বাড়িয়েছেন নেতানিয়াহু। চলতি মাসের শুরুর দিকে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট, এবিসি নিউজ।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।