মুসলিম তরুণকে বাঁচিয়ে হত্যার হুমকিতে গগনদ্বীপ সিং
উত্তেজিত জনতার গণপিটুনি থেকে এক মুসলিম তরুণকে বাঁচিয়ে প্রাণনাশের হুমকির মুখোমুখি হয়েছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। তবে জনতার পিটুনি থেকে ওই তরুণকে রক্ষার পর অনেকেই পুলিশের এই কর্মকর্তাকে ‘নায়ক’ হিসেবে উল্লেখ করে প্রশংসা করেছেন।
ভারতের উত্তরাঞ্চলের ঝাড়খণ্ড প্রদেশের পুলিশ কর্মকর্তা গগনদ্বীপ সিং। গত সপ্তাহে একদল উত্তেজিত হিন্দুর গণপিটুনি থেকে মুসলিম তরুণকে রক্ষা করেন তিনি। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ওই তরুণ তার হিন্দু প্রেমিকাসহ একটি মন্দিরে গিয়েছিলেন। এসময় তার বিরুদ্ধে ‘লাভ জিহাদে’র অভিযোগ এনে উত্তেজিত জনতা ঘিরে ফেলে এবং মারধরের চেষ্টা করে।
ভারতে ‘লাভ জিহাদ’ শব্দটি কট্টরপন্থী হিন্দুদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। হিন্দুরা মনে করেন, লাভ জিহাদের মাধ্যমে একজন মুসলিম তরুণ হিন্দু তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে; পরে তাকে ধর্ম পরিবর্তনে বাধ্য করে।
পুলিশ কর্মকর্তা গগনদ্বীপ সিং বলেন, ‘আমি শুধুমাত্র আমার দায়িত্ব পালন করেছি। এমনকি আমি যদি পুলিশের পোশাকে নাও থাকতাম, তাহলেও একই ধরনের কাজ করতাম এবং একই কাজ করা উচিত প্রত্যেক ভারতীয়র।’
তবে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরু হতে খুব বেশি সময় লাগেনি দেশটিতে। অনেকেই পুলিশের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসংলগ্ন আচরণের অভিযোগ করেছেন।
গগনদ্বীপের সহকর্মীরা বলেছেন, ‘হত্যার হুমকি পেয়েছেন তিনি এবং তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।’
দেশটির সরকারি কিছু কর্মকর্তা মন্দিরের উত্তেজিত জনতার পক্ষে সাফাই গাইছেন। ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এমএলএ রাকেশ নাইনওয়াল বিবিসিকে বলেন, ‘মন্দির ও ধর্মীয় স্থাপনা জেনেও যখন একজন মুসলিম তরুণ তার প্রেমিকাকে নিয়ে আমাদের উপাসনাস্থলে আসেন তখন সেটা অন্যায়।’
বিজেপির অপর এমএলএ রাজকুমার ঠুকরাল বার্তাসংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘এর মাধ্যমে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত হানার চেষ্টা করেছেন ওই মুসলিম তরুণ।’
তিনি বলেন,‘আমরা মসজিদে যাই না। কারণ সেখানে যাওয়ার অধিকার আমাদের নেই। তাহলে হিন্দু সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার জন্য কেন এই তরুণ ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের মন্দিরে গেল?’
এসআইএস/পিআর