যেভাবে গাজায় অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করছে ইসরায়েল (ভিডিও)
ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ ও ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবের সঙ্গে এখন ড্যাভিড ও গোলিয়াথের নাম উচ্চারণ হয়। খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেলে ডেভিড-গোলিয়াথের যুদ্ধের বর্ণনা আছে; যেখানে বিশালাদেহী যোদ্ধা গোলিয়াথ হার মানে পুচকে ডেভিডের কাছে। তবে বর্তমানে যুদ্ধের ময়দানে লড়ায়ের প্রয়োজন হয় না গোলিয়াথের।
ইসরায়েলি সীমান্তের গাজা উপত্যকা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বৃষ্টির মতো টিয়ারগ্যাস ফেলছে নতুন আবিষ্কার ক্ষুদে ড্রোন ব্যবহার করে।
ক্ষুদে এই ড্রোন প্রথম দেখা যায় মার্চের শুরুর দিকে। ওই সময় লেবাননের টেলিভিশন চ্যানেল আল-মায়াদিন গাজায় একদল বিক্ষোভকারীর ফুটেজ সংগ্রহ করে; যারা ওই ড্রোনের নিশানায় পরিণত হয়েছিল। ছিটমহল গাজায় বিক্ষোভের মধ্যে গ্যাস বহনকারী ড্রোন ব্যাপকমাত্রায় ব্যবহার করা হয় গত সোম এবং মঙ্গলবার।
ভিডিও :
VIDEO: Israel has developed drones that deploy tear gas. In mid-March Israeli military officials said they had experimented with them in Gaza. They now seem operational. pic.twitter.com/9RxUUB7XAS
— Sharif Kouddous (@sharifkouddous) May 14, 2018
আকাশ থেকে গ্যাস ছিটিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তিন ধরনের ড্রোনের ব্যবহার দেখা যায়। এর মধ্যে প্রথম ড্রোনটি তৈরি করেছে ইসরায়েলি কোম্পানি আইএসপিআএ। এটার নাম দেয়া হয়েছে ‘সাইক্লোন কন্ট্রোল ড্রোন সিস্টেম।’ আকারে ক্ষুদে এক ড্রোন। এতে রয়েছে নয়টি ছোট অ্যালুমিনিয়ামের কার্তুজ বক্স। ড্রোন থেকে যখন এগুলো নিচের দিকে তীব্র বেগে ধেয়ে আসে তখন আগুনে ঝলসে উঠে।
এছাড়াও আরো দুই ধরনের ড্রোন ব্যবহার করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী; যার ব্যবহার অতীতে কখনোই দেখা যায়নি বলে বিশেষজ্ঞরা মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছেন।
ভিডিও :
Watch Israeli drones drop tear gas on journalists who were documenting Israel's massacre in Gaza.
— CJ Werleman (@cjwerleman) May 15, 2018
The entire Israeli enterprise is built on a war against truth. It not only spends hundreds of millions of dollars in propaganda (hasbara) but also deliberately targets journalists. pic.twitter.com/kSjwReWECn
এর মধ্যে একটি ড্রোন আছে, যেখান থেকে অ্যারোসেলের মতো সরাসরি গ্যাস ছোড়া হয় বিক্ষোভকারীদের ওপর; যা নিচের দিকে মেঘের মতো আবরণ হয়ে ধেয়ে আসে।
তবে ওপরের দুটির চেয়ে বিপজ্জনক ডিভাইস হচ্ছে তৃতীয়টি। এই ড্রোনটি দেখতে অনেকটা হেলিকপ্টারের মতোই। রাবারের গ্রেনেড রয়েছে এই ড্রোনে; যার সম্মুখভাগে রয়েছে শক্ত এক ধরনের ধাতু। ড্রোন থেকে এসব গ্রেনেড মাটিতে পৌঁছানোর পর গ্যাস ছড়িয়ে দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি সপ্তাহে ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ বিক্ষোভ কর্মসূচি তীব্র আকার ধারণ করে। এসময় ইসরায়েলি বাহিনীকে বিপজ্জনক এই গ্রেনেড গ্যাস বহনকারী ড্রোনের ব্যবহার বেশি করতে দেখা যায়।
ইসরায়েলের মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী ইত্যা ম্যাক; দেশটির সামরিক রফতানির ব্যাপারে খোঁজ-খবর রাখেন তিনি। ম্যাক বলেন, ‘বাণিজ্যিক ড্রোনের চেয়ে এই ড্রোন বেশি অত্যাধুনিক। এটা এমন বস্তু নয়; যা অ্যামাজন থেকে সস্তা মূল্যে কেনা যায়। তবে এটি যে অ্যামাজনে পাওয়া যাবে না; আমি তেমন মনে করছি না।’
এই ড্রোন থেকে একসঙ্গে প্রচুরসংখ্যক টিয়ারগ্যাস গ্রেনেড নিক্ষেপ করা যায়। কনফ্লিক্ট আর্মামেন্ট রিসার্চের নির্বাহী পরিচালক জেমস বেভান বলেন, ‘ড্রোনটি উড্ডয়নের সময় র্যাকে গ্রেনেড এমনভাবে বসানো হয়, যা নিক্ষেপের পর নিজ থেকেই পিন খুলে গ্যাস ছড়িয়ে দেয়।’ মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই ড্রোন সিরিয়া এবং ইরাকে ব্যবহার করেছে।
বেভানের মতে, আইএস একমাত্র গোষ্ঠী যাদের হাতে এই হেলিকপ্টার ধাঁচের ক্ষুদে ড্রোন আছে; যা যুদ্ধের সময় ব্যবহার করে তারা। ইরাকের মসুল এবং সিরিয়ার তাল আফার এলাকায় এর ব্যবহার বেশি দেখা গেছে।
এসআইএস/জেআইএম