রোল ডাকলে বলতে হবে ‘জয় হিন্দ’
শিক্ষার্থীদের মনে দেশপ্রেম বাড়াতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি নির্ধারণে শিক্ষক যখন রোল নম্বর ধরে ডাকবেন তার জবাবে শিক্ষার্থীকে ‘ইয়েস স্যার’ বা ’ইয়েস ম্যাডাম’ বলার পরিবর্তে বলতে হবে ‘জয় হিন্দ’।
আট মাস আগে শিক্ষামন্ত্রী বিজয় শাহ এ বিষয়ে একটি ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার মধ্য প্রদেশের স্কুল শিক্ষা বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।
শিক্ষামন্ত্রীর বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আজাদ হিন্দ ফৌজের সৈনিকরা প্রথম এ স্লোগান দিয়েছিলেন। এই স্লোগান নিয়ে আগে কোনো বিতর্ক হয়নি এবং সকল ধর্মের শিক্ষার্থীরা এটি গ্রহণ করেছিল।
এখন থেকে শিক্ষার্থীদের রোল ডাকার সময় বলতে হবে জয় হিন্দ। শিক্ষার্থীদের অনেকেই ইতোমধ্যে শব্দটি রপ্ত করে ফেলেছে। কারণ, গত বছরের অক্টোবর থেকে শিক্ষার্থীরা এটি চর্চা করে আসছে যদিও ওই সময় এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা ছিল না।
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, ‘জয় হিন্দ’ বলার সময় শিক্ষার্থীদের শরীরী ভাষায় ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে।
মাজহাব সরকারি স্কুলের রাজেশ ত্রিপাঠি নামের এক শিক্ষক জানান, গত ছয় মাসে, শিক্ষার্থীদের শরীরী ভাষায় (বডি ল্যাঙ্গুয়েজ) আমরা উন্নতি লক্ষ্য করেছি। আগে, তারা ‘ইয়েস স্যার’, ‘জী স্যার’, ‘উপস্থিত হ্যায় স্যার’ বলে রোল ডাকার জবাব দিত এবং হাসাহাসি করত। কিন্তু এখন, ‘জয় হিন্দ’ বলার সময় তারা খুবই শান্ত ও মনোযোগী থাকে।
বিষয়টা এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, শিক্ষার্থীরা দেখা হলে ‘নমস্তে’ বলার পরিবর্তে অবাক করে দিয়ে ‘জয় হিন্দ’ বলা শুরু করেছে, জানান তিনি।
সন্দ্বীপ গার্গ নামের আরেকজন সরকারি স্কুলের শিক্ষক জানান, এই স্লোগানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। শব্দটির উদ্ভাবক আবিদ হাসান সাফ্রানি এবং সুভাষ চন্দ্র বোস যিনি শব্দটি জনপ্রিয় করে তুলেছেন, তাদের সম্পর্কে জানতে শিক্ষার্থীদের কৌতুহল বেড়েই চলেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য এটি ভালো।
যোগেন্দ্র সিং গাউদ নামের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র বলে, যখন আমি মনোযোগ আকর্ষণ করার লক্ষ্যে জয় হিন্দ বলি, তখন আমি গর্ব অনুভব করি। কে কত জোরে বলতে পারে, এ নিয়ে আমরা রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু করে দিই।
সপ্তম শ্রেণির ছাত্র পুনম সিংয়ের মতে, এই স্লোগান তাকে এতটাই অনুপ্রাণিত করেছে যে, সে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চায়। এ সিদ্ধান্তে সে খুশি বলে জানায়।
এসআর/এনএফ/জেআইএম