শেষবারের মতো মেয়েকে স্পর্শ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৩৯ পিএম, ১৭ মে ২০১৮

পৃথিবীতে সে বেঁচে ছিল মাত্র পাঁচদিন। এই পাঁচটা দিন তাকে লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখা হয়। কিন্তু এই কয়েকদিনের বয়সেই সে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে গেছে। বেঁচে থাকার জন্য তাকে যে কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছিল তা তার বাবা-মা সহ্য করতে পারছিল না।

baby

সে কারণেই তারা সিদ্ধান্ত নেন তাদের মেয়ের লাইফ সাপোর্ট বন্ধ করে দেবেন। এটা সত্যিই খুব দুঃখজনক। কারণ একটা শিশুর জন্মকে কেন্দ্র করে পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু পৃথিবীতে আসার কয়েক দিনের ব্যবধানেই যদি তাকে চলে যেতে হয় তবে তা বাবা-মায়ের জন্য সত্যিই খুব বেদনাদায়ক। আর সেটা যদি নিজেদের চোখের সামনেই হয় তাহলে সেটা প্রকাশ করার আর কোনো ভাষা থাকে না।

একটি আসেইসেনকিউবেটরের মধ্যে শুয়ে আছে আদরের মেয়ে অ্যাম্বার লিউস। শেষবারের মতো মেয়ের ছোট্ট গাল আর হাতের আঙুলগুলো স্পর্শ করছেন। আরতো নিজের সন্তানকে চাইলেও একটু ছুয়ে দেখতে পারবেন না।

baby

শিশুটির বয়স যখন মাত্র পাঁচদিন তখনই তার মা গ্যাবি উরুতিয়া এবং বাবা রিচার্ড লিউসকে তাদের জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হলো। তারা সিদ্ধান্ত নিলেন যে তাদের সন্তানকে এভাবে কষ্ট দিয়ে বাঁচিয়ে রাখবেন না। তাই তারা শিশুটির লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ছোট্ট শিশুটির শারীরিক অবস্থা এতটাই জটিল ছিল যে, তার জন্য বাবা-মায়ের আসলে কিছুই করার ছিল না। এই দম্পতি অনুভব করছিলেন যে, তাদের ছোট্ট মেয়েটা কয়েকদিনের পৃথিবীতে যথেষ্ঠ কষ্ট পেয়েছে। তাই তাকে আর কষ্ট দিতে চাচ্ছিলেন না তারা।

baby

অ্যাম্বারের বাবা রিচার্ড (৩৫) একটি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি অনুভব করেছি যে তাকে আকড়ে ধরে রাখতে পারলাম না। তিনি বলেন, কোনো বাবা-মা হাসপাতালে তাদের সদ্য জন্ম নেয়া শিশুর মৃত্যু দেখতে চান না।

baby

তিনি আরও বলেন, তবে শেষ পর্যন্ত আমরা খুশি। কারণ সে এই পাঁচদিনে বেঁচে থেকে যথেষ্ট কষ্ট পেয়েছে। এ বছরের জানুয়ারির ২ তারিখে গ্রুপ বি স্ট্রেপটোকোকাস বা জিবিএসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় শিশু অ্যাম্বার। যুক্তরাজ্যে সদ্যজাত শিশুদের ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমনে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা খুব বেশি ঘটে। তবে ওয়েলস এনএইচএসে এ ধরনের রোগের আগে থেকে কোনো পরীক্ষা করা হয় না। কেন এমনটা হয় না সে বিষয়টি বুঝতে পারছেন না রিচার্ড এবং গ্যাবি।

রিচার্ড বলেন, অনেক দেশেই রুটিনমাফিক এসব রোগের পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি সত্যিই খুব অবাক হচ্ছি যে, এখানে সেটা সম্ভব হচ্ছে না।

টিটিএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।