হুমকির মুখে রাজধানীর সাইবার ক্যাফে ব্যবসা
ব্যক্তিপর্যায়ে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে রাজধানীতে সাইবার ক্যাফের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পেয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। মোবাইলে সব ধরনের কাজের সুবিধা থাকাতে এখন আর কেউ সাইবার ক্যাফেতে প্রবেশ করতে চায় না। তাই এই ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরা চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন। অনেকে নিজের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন।
সাইবার ক্যাফে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রাহক সংখ্যা কমে যাওয়ায় গত পাঁচ বছরে ৪০ শতাংশ ক্যাফে বন্ধ হয়ে গেছে। ইন্টারনেটের দাম কমে যাওয়ায় বাংলাদেশে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
এ দিকে মোবাইল গুলো গ্রাহকদের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে নানা প্যাকেজ চালু করেছে। তাছাড়া থ্রিজি সেবা চালুর পর মোবাইল ইন্টারনেটের গতিও বেড়েছে। ফলে এখন আর কেউ সাইবার ক্যাফেতে না গিয়ে নিজেরাই ইন্টারনেট প্যাকেজ কিনে ব্যবহার করছেন।
সব ধরনের মোবাইল গ্রাহকের কথা চিন্তা করে ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্যাকেজের ব্যবস্থা রেখেছে মোবাইল অপারেটররা। এসব কারণেই সাইবার ক্যাফে ব্যবসা এখন অনেকটাই হুমকির মুখে।
সাইবার ক্যাফে ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (সিসিওএবি) তথ্যমতে, ঢাকায় বর্তমানে সাইবার ক্যাফের সংখ্যা ৪০০ তে নেমে এসেছে। ২০১০ সালেও এ সংখ্যা ছিল ৭৫০। সারা বাংলাদেশেও সাইবার ক্যাফের সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১০ সালে এ সংখ্যা ছিল প্রায় দুই হাজার। গত চার বছরে দেশে সাইবার ক্যাফের সংখ্যা ৮০০টি কমেছে।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গত মে মাস শেষে দেশে সেলফোন সংযোগ সংখ্যা ১২ কোটি ৬০ লাখ ছাড়িয়েছে। আর ইন্টারনেট সংযোগ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৭৪ লাখ ২১ হাজার।
চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে সেলফোনে ইন্টারনেট সংযোগ বেড়েছে ৩৭ লাখ ৯৯ হাজার। কিন্তু পাঁচ বছর আগেও চিত্রটি এমন ছিল না। ২০১০ সালে মাত্র ৫০ লাখ মানুষের সেলফোনে ইন্টারনেট সংযোগ ছিল।
তুলনামূলক কম দামের স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি দ্রুতগতির ইন্টারনেটের প্রসার আর সেলফোন অপারেটরদের ইন্টারনেটের নানা প্যাকেজ সাইবার ক্যাফের ব্যবসাকে শেষ করে দিচ্ছে।
২০০৬ সালে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হওয়ার পর সাইবার ক্যাফে ব্যবসার ব্যাপক প্রসার ঘটে। সে সময়ে বেশির ভাগ সাইবার ক্যাফে ঢাকায় গড়ে ওঠলেও পরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
এসকেডি/আরআইপি