বাগেরহাটের উপকূলীয় বাসিন্দাদের জন্য খোলা হয়েছে ৫টি কন্ট্রােল রুম
ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাবে বৃহস্পতিবার প্রত্যুষে বৃষ্টিপাত না হলেও গুমোট অবস্থা বিরাজ করছে। তবে সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে গুমোট অবস্থার পাশাপাশি থেমে থেমে দমকা হাওয়া বইতে শুরু করেছে। বাগেরহাট জেলা সদরসহ মংলা, রামপাল, শরনখোলা ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
মাঝারি এ ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় বাগেরহাটের উপকূলীয় উপজেলা মংলা, শরনখোলা ও মোড়েলগঞ্জে বুধবার রাতে মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মংলা বন্দরে জাহাজের মালামাল ওঠা নামার কাজ বন্ধ রয়েছে।
সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকাসহ সাগর সংলগ্ন বলেশ্বর নদীতে মাছ ধরারত ট্রলার ও নৌকায় অবস্থানরত সকল জেলেদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। খোলা হয়েছে উপজেলায় কন্ট্রােল রুম। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় জরুরি বৈঠক চলছে। পাশাপশি ঘূর্ণিঝড় কোমেন মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জরুরি সভা চলাকালীন সময়ে বলা হয় যেকোনো ধরনের দূর্যোগ মোকাবেলায় সকল পর্যায়ের কর্মকর্তার ছুটি বালিত করা হয়েছে। জেলা কন্ট্রোল রুমসহ উপকূলীয় চার উপজেলা মংলা, শরনখোলা, মোড়েলগঞ্জ ও রামপালে মেডিকেল টিম গঠনসহ পৃথক কন্ট্রােলরুম খোলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবকসহ বেশ কিছু অ্যাম্বুলেন্স।
এদিকে মংলা বন্দরে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় মংলা বন্দর চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা জরুরি বৈঠকে বসেছেন। গত রাতেই মংলার বিভিন্ন দ্বীপ ও চরাঞ্চচলে বসবাসরতদের সরিয়ে আনা শুরু হয়েছে। সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা ভূমি কর্মকতা (এসিল্যান্ড) মো.নাজমুল হক জাগো নিউজকে জানান, বুধবার রাতেই লোকজনকে সতর্ক করতে মাইকিং করা হচ্ছে, একটি মেডিকেল টিম গঠনসহ স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মংলা বন্দরে এ মুহূর্তে ৫টি জাহাজ রয়েছে। বৃহস্পতিবার একটি ছেড়ে যাওয়াসহ অপর একটি জাহাজ বন্দরে প্রবেশের কথা ছিল। কিন্ত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সব ধরনের জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে জাহাজের মালামাল ওঠানামার কাজ। সকালে মুঠোফোনে এ কথা জানান, মংলা বন্দরের হারবার কন্ট্রোল মো. জামাল উদ্দিন।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতুল মণ্ডল জাগো নিউজকে জানান, ৫ নম্বর সতর্ক সংকেত জারির পর রাত থেকে শরণখোলায় সর্ব দক্ষিণের ইউনিয়ন সাউথখালীর বলেশ্বর নদী তীরের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে মাছ ধরারত জেলেদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে কয়েকশ নৌকা ও ট্রলার নিরাপদে নোঙর করেছে। উপজেলায় ৩৭টি ব্যবহার উপযোগী সাইক্লোন শেলটার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শওকত আলী বাবু/এমজেড/পিআর