পানিতে ভাসল ‘নিউক্লিয়ার টাইটানিক’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৫০ এএম, ০১ মে ২০১৮

রাশিয়ার তৈরি বিতর্কিত ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিভাবে সাগরে ভাসানো হয়েছে। পরিবেশবাদীরা এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে ‘নিউক্লিয়ার টাইটানিক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নাম দেয়া হয়েছে ‘অ্যাকাডেমিক লমোনোসভ।’ সেন্ট পিটার্সবার্গ শিপইয়ার্ডে তৈরি করা হয় এটি। সেখানে থেকেই শনিবার ভাসানো হয় এটিকে।

লমোনোসভের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পারমাণবিক শক্তি সংস্থা রোসাতম বলছে, বাল্টিক সাগর হয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে মুরমানস্কের একটি ঘাঁটিতে নেয়া হবে।

২০১৯ সালের গ্রীষ্মে পেভেকের আর্কটিক বন্দরে নেয়ার আগে বিশ্বের প্রথম এই ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে পারমাণবিক জ্বালানি দেয়া হবে। ওই বন্দর থেকেই কাজ শুরু করবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন তীব্র সমালোচনা করে আসছে রোসাতমের এই প্রকল্পের। গ্রিনপিস এ প্রকল্পকে ‘ভাসমান চেরনোবিল’ ও ‘নিউক্লিয়ার টাইটানিক’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

গ্রিনপিসের মধ্য ও পূর্ব ইউরোপবিষয়ক নিউক্লিয়ার বিশেষজ্ঞ জ্য হ্যাভারকাম্প বলছেন, সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রাথমিক পরীক্ষায় এটি উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও পরিবেশের জন্য লমোনোসভ এখনও বড় হুমকি।

‘সেন্ট পিটার্সবার্গের মতো ঘনবসতিপূর্ণ একটা অঞ্চলে নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর পরীক্ষা করাটা দায়িত্বজ্ঞানশূন্য কাজ ছাড়া আর কিছু নয়। যাই হোক, মানুষের চোখের সামনে থেকে এই ‘নিউক্লিয়ার টাইটানিক’ সরিয়ে নিলেই তা ক্ষতির মাত্রা কমাতে না।’

তিনি আরও বলছেন, আর্কটিক সাগরে নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের উপস্থিতি ভঙ্গুর পরিবেশেন জন্য বড় ক্ষতির হুমকির কারণ হবে; জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমনিতেই পরিবেশের ওপর বড় ধরনের চাপ রয়েছে। বিপজ্জনক এই উদ্যোগ কেবল আর্কটিকের জন্যই হুমকি নয়, বরং অন্য ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ও অরক্ষিত প্রাকৃতিক অঞ্চলগুলোর জন্যও এটা একটা হুমকি।’

পরিকল্পনা অনুযায়ী রাশিয়ার একেবারে উত্তরে ও পূর্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে লমোনোসভ।

রোসাতম বলছে, ১ লাখ মানুষ বাস করে এমন কোনো শহরের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে এই রিঅ্যাক্টরের।

২০১৯ সালে দ্বিতীয় ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরু হতে পারে। সেই সঙ্গে এগুলো অন্যান্য দেশে বিক্রি করা হতে পারে বলেও রুশ গণমাধ্যমে খবর রয়েছে।

লমোনোসভের নির্মাণ কাজ চলার সময়ই সমুদ্রে সম্ভাব্য কোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল নরওয়ে ও সুইডেন।

তবে রোসাতম বারবারই বলছে, পারমাণবিক দুর্যোগ ঠেকাতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

কোম্পানিটি একটি বিবৃতিতে দাবি করেছে, লমোনসভে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে; যা সম্ভাব্য সব ধরনের হুমকি মোকাবিলায় সক্ষম। সুনামিসহ অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই রিঅ্যাক্টরগুলোর কোনো ক্ষতি হবে না।

সূত্র : দ্য ইন্ডেপেন্ডেন্ট।

এনএফ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।