শুধু নাই নাই, কিন্তু টাকা দিলে সব হয়
নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ নিয়ামতপুর জোনাল কার্যালয়ে দালাল ছাড়া কোনো কাজ হয় না। বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যেকোনাে কাজ নিয়ে গেলে নানা অজুহাতে তা করা হয় না। কিন্তু টাকা দিলেই সব কাজ মুহূর্তেই হয়ে যায় বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।
বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন, ট্রান্সফর্মার পরিবর্তন, মিটার রিডার ভুল লিখাসহ গ্রাহক হরয়ানি, বিভিন্ন অনিয়ম ও অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যুৎ অফিসের লাইনম্যান থেকে শুরু করে প্রত্যেক কর্মকর্তা কর্মচারী টাকা ছাড়া কোনো কাজ করেন না বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।
জানা গেছে, ট্রান্সফর্মার পরিবর্তনের কোনো টাকা লাগে না কিন্তু নিয়ামতপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ১৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করতে গেলে ফিরিয়ে দেওয়া, আবার ওই আবেদনই নেওয়া হয় টাকা কিংবা সুপারিশ থাকলে। আবাসিক আবেদনের রির্পোট করতে গ্রাহক প্রতি দেড় হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। টাকা ছাড়া কোনো রির্পোট করা হয় না। সাধারণ গ্রাহকরা কোনো সেবা পান না ঘুষ বা সুপারিশ ছাড়া।
জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মুনসুর আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়ে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে রুদ্রপুর গ্রামের হারুন অর রশিদের সেচ মর্টার (এসটিডব্লিউ) সংযোগ করিয়ে দেয়। ছাড়পত্র একদাগে আর সেচ মর্টার বসানো হয়েছে আরেক দাগে। আরো অভিযোগ রয়েছে সেচ মর্টার এর রির্পোট করতে ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয় মুনসুর আলীকে। এছাড়া ইন্সপেক্টর সম্প্রতি বদলি হয়ে ধামুইরহাট উপজেলায় মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধেও ঘুষ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার কুমারগাড়া গ্রামের আফাজ উদ্দিন ও মাইনুল ইসলামের সেচ মর্টার কয়েকশ ফুট দূরে যা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আইনের পরিপন্থি। সংযোগ দেয়া হয়েছে সম্পূর্ণ অবৈধ টাকায়। বাহাদুরপুর গ্রামের আফাজউদ্দিন এর কোনো বরিং নাই অথচ মুনসুর আলীকে ঘুষ দিয়ে টাকার বিনিময়ে বরিং আছে বলে ভুয়া রিপোর্ট দেয়।
উপজেলার বালাহৈর গ্রামের শম্ভু দাস জাগো নিউজকে জানান, বিদ্যুতের তেমন কোনো ব্যবহার না থাকলে এক মাসে ৩৫ হাজার টাকা বিল এসেছে। ভুয়া বিলের ব্যাপারে অভিযোগ নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে গেলে ডিজিএম আগে বিল পরিশোধ করতে বলেন। পরে অভিযোগ গ্রহণ করা হবে। বাধ্য হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানালে পরে ডিজিএম অভিযোগটি গ্রহণ করেন এবং মিটার পরিবর্তন করে দেন।
নিয়ামতপুর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) নুরুল ইসলাম সরকার জাগো নিউজকে জানান, আমার কিছু করার নেই। এমপি মহোদয় যা বলেন আমাকে তাই করতে হয়। তা নিয়মের মধ্যে হোক বা অনিয়মের মধ্যেই হোক। অনিয়মই এখন নিয়ম হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
এমজেড/পিআর