ঐতিহাসিক করমর্দন

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৩৭ এএম, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

প্রায় সাড়ে ছয় দশকের বৈরিতার অবসান ঘটিয়ে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ঐতিহাসিক ঐকমত্যে পৌঁছেছে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন ঘোষণা দিয়েছেন, কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করতে একসঙ্গে কাজ করবেন তারা।

দুই দেশের সীমান্তবর্তী গ্রাম পানমুনজমে শুক্রবার এক ঐতিহাসিক বৈঠকের পর কিম ও মুনের যৌথ এ ঘোষণা আসে। এর আগে, সীমান্তের ডিমার্কেশন লাইনের সিমেন্টের ব্লকের দু’পাশে দাঁড়িয়ে হাত মেলান চির বৈরী উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার দু’নেতা। এরপর দু’জনই দু’দেশের বিভাজন রেখা অতিক্রম করে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরলেন। সূচনা হয় নতুন এক যুগের।

p-3

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনকে বলেন, প্রতিবেশী এ দেশের মাটিতে পা রেখে হাঁটার সময় তিনি ‘আবেগাপ্লুত’ হয়ে পড়েছিলেন। এক দশকেরও অধিক সময় পর আন্তঃকোরীয় সম্মেলন তিনি একথা বলেন। খবর এএফপি’র।

২০০৭ সালে পিয়ংইয়ংয়ে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে কিম বলেন, সীমান্তের ডিমার্কেশন লাইনের সিমেন্টের ব্লক অতিক্রম করা ‘অতি সহজ’ ছিল। তবে তিনি একথা ভেবে বিস্মিত হন যে, এটা ঘটতে কেন এক দশকের বেশি সময় লাগলো।

কিম হলেন উত্তর কোরিয়ার প্রথম নেতা যিনি কোরীয় যুদ্ধের অবসানের পর দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে পা রাখলেন। ডিমিলিটারাইজ জোনে যুদ্ধবিরতি পালন করা কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টিত পানমুনজম গ্রামের শান্তি হাউজে কিম বলেন, ‘আমি দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে পা রেখে প্রায় ২শ’ মিটার পথ হেঁটেছি। এ সময় আমি অনেক আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম।’

p-2

তিনি মুনকে বলেন, এর মধ্য দিয়ে আন্তঃকোরীয় ইতিহাসের নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা হলো।

আন্তরিক প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনার ইঙ্গিত দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি এখানে এসেছি।’

এর আগে ২০০০ ও ২০০৭ সালে দুই কোরিয়ার মধ্যে এ ধরনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেদিক থেকে এটি হচ্ছে তৃতীয় সম্মেলন। কিম বলেন, তিনি সর্বশেষ এ সম্মেলন প্রশ্নে সতর্ক ছিলেন। তিনি একটি স্থায়ী চুক্তি করার প্রতিশ্রুতি দেন।

ইয়াসির আরাফাত-আইজাক রবিনের করমর্দন

নরওয়ের অসলোতে কয়েক মাস গোপন আলোচনার পর ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আইজাক রবিন এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গ্যানাইজেশন (পিএলও)-র প্রধান ইয়াসির আরাফাত নিজেদের মধ্যে শান্তি স্থাপনে একমত হন৷ ছবিটি ১৯৯৩ সালে সেপ্টেম্বরের ১৩ দারিখে তোলা৷ হোয়াইট হাউজের দক্ষিণ লনে দুই নেতা দাঁড়িয়ে করমর্দন করছেন। পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন।

north

ওবামা- রাউল কাস্ত্রোর করমর্দন

৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরস্পরের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন দেশ কিউবা আর আমেরিকা৷ ২০১৩ সালে নেলসন ম্যান্ডেলার স্মরণ অনুষ্ঠানে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো হাত মেলান৷ পরে ২০১৬ সালে ওবামা ৮৮ বছরের মধ্যে প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কিউবা সফর করেন৷

north

রানি এলিজাবেথ-ম্যাকগিনিসের করমর্দন

ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথের সঙ্গে আয়ারল্যান্ডের সাবেক সশস্ত্র বিদ্রোহী দল আইরিশ রিপাবলিকান আর্মির প্রধান কমান্ডার ম্যাকগিনিসের করমর্দনও একটি ঐতিহাসিক ঘটনা৷ ২০১২ সালে রানি যখন উত্তর আয়ারল্যান্ড সফরে যান, তখন ম্যাকগিনিস তার সঙ্গে করমর্দন করেন৷

p

শি জিনপিং- মা ইং জেওয়ের করমর্দন

১৯৪৯ সালে গৃহযুদ্ধের পর দীর্ঘদিন চীন ও তাইওয়ানের সম্পর্ক দা-কুমড়া ছিল৷ ২০১৫ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং তাইওয়ানের মা ইং জেও সিঙ্গারের এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন৷ সেখানে তারা কয়েক মিনিট ধরে কথা বলেন এবং করমর্দন করেন৷
p-1

এমএআর/জেএইচ

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।