ধর্ষণ ধর্মগুরুদের জন্য পাপ নয়, বিশ্বাস আসারামের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:২৬ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ভারতের বিতর্কিত ধর্মগুরু আসারাম বাপু বিশ্বাস করতেন, মেয়েদের যৌন শোষণ করা ‘ব্রহ্মজ্ঞানী’ বা ‘জ্ঞানী ব্যক্তি’ যারা ‘সাধক’ হিসেবে পরিচিত তাদের জন্য পাপ নয়। স্বঘোষিত এই ধর্মগুরুর আশ্রমে এক স্কুলছাত্রীকে নিপীড়নের প্রত্যক্ষদর্শী রাহুল কে সাচার আদালতকে এ তথ্য জানান।

আসারাম বাপুর ভক্ত ছিলেন রাহুল কে সাচার। আদালতকে তিনি বলেন, যৌন সক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত ওষুধ সেবন করতেন আসারাম। কয়েক বছর আগে আশ্রমে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে গেছেন ধর্মগুরু আসারাম ও তার এক সহযোগী।

আসারামের ঘনিষ্ঠ ছিলেন সাচার। দণ্ডিত এই ধর্মগুরুর ‘কুটিয়া’ বা ‘আশ্রমে’ প্রবেশের অনুমতি ছিল সাচারের। ২০০৩ সালে সাচার রাজস্থানের পুস্কর, হরিয়ানার ভিওয়ানি এবং গুজরাটের আহমেদাবাদের আশ্রমে তরুণীদের যৌন-নিপীড়ন চালাতে দেখেন আসারামকে।

আরও পড়ুন : সেনা অভ্যুত্থানের হুমকিতে ইরান?

নতুন নতুন তরুণীদের আসারামের আশ্রমে নিয়ে যেতেন ওই তিন তরুণী ও সাচার। রাস্তায় টার্গেটকৃত তরুণীকে তারা নিয়ে যেতেন কুটিয়ায়। তরুণীদের টার্গেট করার জন্য ওই তিন তরুণীসহ আশ্রমের আশপাশের এলাকায় ঘুরতেন সাচার।

আহমেদাবাদে এক সন্ধ্যায় কুটিয়ার প্রাচীরে উঠে সাচার দেখেন, স্বঘোষিত এই ধর্মগুরু এক তরুণীকে যৌন হয়রানি করছেন। পরে আসারামের কাছে একটি চিঠি লিখে সাচার জানতে চান কেন তরুণীদের সঙ্গে এ ধরনের কাজ করছেন। ওই চিঠিটি তিনি কুটিয়ার পাচককে দিয়েছিলেন। আসারাম চিঠি পড়লেও কোনো জবাব দেননি।

আসারামের কাছে দ্বিতীয় আরেকটি চিঠি লিখেন ভক্ত সাচার। কিন্তু এবারও কোনো জবাব দেননি এ ধর্মগুরু। পরে তিনি জোরপূর্বক কুটিয়ায় প্রবেশ করে আসারামের কাছে জানতে চান কেন তিনি প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন না।

আরও পড়ুন : পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সংসদ সদস্য পদে অযোগ্য ঘোষণা

এর জবাবে আসারাম বলেছিলেন, ‘ব্রহ্মজ্ঞানী কো ইয়ে সাব করনে সে পাপ নেহি লাগতা। অর্থাৎ ব্রহ্মজ্ঞানী বা সাধকরা সব কিছু করে, এতে তাদের জন্য পাপের কিছু নেই।’

পরে তিনি আবারও আসারামের কাছে জানতে চান, কীভাবে একজন ধর্মগুরু এ ধরনের কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেন। তার এই প্রশ্নে নীরব আসারাম ভেতরে ঢুকে কুটিয়া থেকে সাচারকে বের করে দেয়ার জন্য ভক্ত ও নিরাপত্তারক্ষীদের নির্দেশ দেন।

এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলে প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়ায় ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ধর্মগুরু আসারামকে গ্রেফতার করা হয়। তখন থেকেই কারাগারে আছেন তিনি। বুধবার জোধপুরের বিশেষ আদালত ধর্ষক এই ধর্মগুরুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।