আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উঠছে রোহিঙ্গা গণহত্যা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০৩ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০১৮

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচার করার এখতিয়ার আছে কিনা তা জানতে চেয়েছেন আন্তর্জাতিক এ আদালতের আইনজীবী ফাতো বেনসৌদা।

সম্ভাব্য এ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের এখতিয়ার হেগের অপরাধ আদালতের আছে কিনা তা জানতে সোমবার রুল চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি। আবেদনে ইতিবাচক সাড়া মিললে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বিতাড়নের ঘটনায় তদন্ত শুরুর পথ তৈরি হতে পারে। যদিও এ ব্যাপারে মিয়ানমার খুব বেশি সহায়তা করবে বলে মনে হয় না।

সোমবার বেনসৌদার ওই আবেদনে রোহিঙ্গা নিপীড়নের শক্ত নথিপত্র তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি রোহিঙ্গা নিপীড়নে 'জাতিগত নিধনের' আলামত স্পষ্ট বলে যে মন্তব্য করেছেন সেটিও তুলে ধরা হয়েছে।

rakhine

মিয়ানমার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদস্য না হওয়ায় বিচারের এখতিয়ার নিয়ে রুল চেয়েছেন বেনসৌদা। তবে তার যুক্তি, মিয়ানমার সদস্য না হলেও অন্য সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এ অপরাধের ধাক্কা লেগেছে। যার অর্থ হচ্ছে, বিচারের এখতিয়ারের অনুমতি চাইতে পারে আদালত।

‘তারপরও আদালত এ বিষয়টিকে আওতাভুক্ত হিসেবে যাচাই-বাছাই করতে পারে। যেহেতু আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে অপরাধটি ঘটছে এবং আদালতের সদস্য বাংলাদেশ তার শিকার হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এটি বিমূর্ত কোনো প্রশ্ন নয়। কিন্তু আদালত বিচার...তদন্ত এবং প্রয়োজনে অভিযুক্ত করতে পারে কিনা তার নিরেট জবাব চাওয়া হয়েছে।’

rohingya

তবে বিতাড়নের এ ঘটনাটি যেহেতু আন্তঃসীমান্ত অপরাধ, সেহেতু আদালত থেকে বিচারের পক্ষে রায় দেয়া হলে একটি আইনী কাঠামোও দাঁড় করানো যেতে পারে। তবে বিতাড়নের অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করার ব্যাপারে যে অস্পষ্টতা রয়েছে তা স্বীকার করেছেন বেনসৌদা। একই সঙ্গে আদালতের বিচারিক সীমাবদ্ধতার কথাও স্বীকার করেছেন তিনি।

মিয়ানমার থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বিতাড়নের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের এখতিয়ারের ব্যাপারে জানতে এটাই প্রথম কোনো আবেদন। তিনি আদালতকে শুনানির জন্য দিনক্ষণ নির্ধারণের অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে এ ব্যাপারে তার যুক্তি ও তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরতে পারেন।

তার এই অনুরোধ বিবেচনা করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য আদালতের বিচারক অ্যান্টনি কেসিয়া এমবে মিনদুয়াকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কীভাবে এই রুলের ব্যাপারে কাজ শুরু করা যায় সেব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন তিনি।

rakhine

জাতিসংঘ বলছে, গত বছরের ২৫ আগস্ট সীমান্তে সন্ত্রাসী হামলার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে দেশটির প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। সেনাবাহিনীর কঠোর অভিযানকে জাতিগত নিধন চেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ।

তবে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার সরকার এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির সরকার বলছে, সরকারি বাহিনীর ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী আইনী অভিযান চালাচ্ছে। মিয়ানমারে কয়েক প্রজন্ম ধরে রোহিঙ্গারা বসবাস করে এলেও দেশটির অনেকেই তাদের অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী হিসেবে মনে করে।

সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।