কবুতর পালন করে স্বাবলম্বী সুজন
মানুষের জীবনে বিভিন্ন ধরনের শখ থাকে। কিন্তু সেই শখ কখনো কখনো জীবনের অর্থনীতির চাকাকে যে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সুজন সরদার। বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের পূর্ব সুজনকাঠী গ্রামের লোকমান সরদারের কলেজ পড়ুয়া ছেলে।
ছোটবেলা থেকেই সুজনের পাখি পালনের প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল। সুজনের কাকা তোতা মিয়া একসময় বাড়িতে কবুতর পালন করতেন। পরে কাজের তাগিদে ঢাকায় চলে যাওয়ায় কবুতরগুলো তিনি বিক্রি করে ফেলেন। কবুতরগুলো বিক্রি করে ফেলায় সুজন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এরপর থেকেই সুজনের কবুতর পালনের আগ্রহ বেড়ে যায়।
২০০০ সালে এক আত্নীয়ের বাড়ি থেকে একজোড়া কবুতর এনে লালন-পালন শুরু করে। পরে ক্রমাগত তার খামারে কবুতর বাড়তে থাকে। বর্তমানে সুজনের খামারে প্রায় ২৫০টি কবুতর রয়েছে। স্থানীয় এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কবুতর ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জাতের কবুতর ক্রয়ের জন্য তার খামারে আসে।
সুজন সরদার জানায়, তার খামারে ১০ প্রজাতির গিরিবাজ কবুতর, ২ প্রজাতির সিরাজী কবুতর, ময়ুর পঙ্গী, কিংসহ ২০ প্রজাতির কবুতর রয়েছে। অনেক প্রজাতির কবুতর থাকায় ক্রেতারা তার পছন্দমত কবুতর কিনতে পারে বিধায় তার খামারের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়।
সে আরো জানায়, খাবার, ঔষধ এবং অন্যান্য ব্যয় ধরে তার খামারে কবুতরের জন্য প্রতি মাসে ব্যয় হয় পাঁচ হাজার টাকা। আর প্রতি মাসে কবুতর বিক্রি হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তার মত বেকার যুবককে কবুতরের খামার অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করেছে।
সুজন সরদার বর্তমানে আগৈলঝাড়া ডিগ্রি কলেজে অধ্যয়ণরত রয়েছে। পড়াশুনার পাশাপাশি কবুতর পালন করে সে এবং তার পরিবার এখন স্বাবলম্বী। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় বেকার সমস্যা দূর করার জন্য সে অনেক শিক্ষিত যুবকদের কবুতরের খামার করতে উদ্বুদ্ধ করছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ কবুতর পালন ও চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে ভাল হত বলে তিনি জানান।
এসএস/পিআর