দীর্ঘদিন পর অফিস করলেন শাবি উপাচার্য


প্রকাশিত: ০৩:১১ পিএম, ২৬ জুলাই ২০১৫

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ একমাসেরও বেশি সময় পর রোববার নিজ কার্যালয়ে যোগদান করে অফিস করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল হক ভূইয়া। এদিকে, উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল হক ভূইয়ার পদত্যাগের দাবিতে সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন আন্দোলনরত মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ।

রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের পাশাপাশি উপাচার্যের ক্ষমতা খর্ব করা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশাসনে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শিক্ষকরা।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ক্ষমতা খর্ব করা বিষয়ক বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও এ সংক্রান্ত্র কোনো চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতরে এসে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন শাবি রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন। তিনি চিঠি বা কোন নির্দেশনার ব্যাপারে কিছুই জানেন না উল্লেখ করে বলেন, চিঠি আসার ব্যাপারে আমি এখনো কিছু জানি না।

অন্যদিকে, শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনা সম্পর্কিত চিঠি রেজিস্ট্রার দফতরে পৌঁছার পূর্বেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফাইল স্বাক্ষর করে নেয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। তাদের মতে, `যেহেতু উপাচার্য এক মাসে অধিক সময় ধরে অফিস করতে পারেনি। এ সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল আটকে পড়ে গেছে। তাই চিঠি আসার পূর্বেই তিনি ফাইলগুলো স্বাক্ষর করে ফেলতে পারেন।`

এই চিঠির আদৌ কোন অস্তিত্ব আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আন্দোলনকারীরা জানান, শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তি রেজিস্ট্রার দফতরে দেয়া হবে। যাতে চিঠি আসার পূর্বেই তারা বিষয়টি অবগত হন। তবে চিঠি আসার আগেই কিভাবে তা প্রকাশ পেলো এ ব্যাপারে কেউ কিছু বলেনি তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এবং আন্দোলনকারী শিক্ষক মো. ফারুক উদ্দীনের সঞ্চালনায় এবং আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুল আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুছ, অধ্যাপক ইয়াসমিন হক, অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।

সমাবেশের পরপরই শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন এবং বিভিন্ন দপ্তরে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানদের স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে উপাচার্যের ক্ষমতা হ্রাস বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের প্রেসনোট সংযুক্ত করা হয়।

এদিকে, শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল হক ভূইয়া শিক্ষকদের এই দাবিকে মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাকে ক্ষমতা খর্বের বিষয়ে কোন নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তাকে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে।

এমনকি বৈঠকের আগে পরে কোন লিখিত বা মৌখিক নির্দেশনা বা নিয়োগ, পোমোশন, আপগ্রেডেশন বিষয়ে কিছইু বলা হয়নি। এছাড়াও তিনি সিন্ডিকেট বা একাডেমিক কাউন্সিলের আয়োজন করতে পারবেন না বলে শিক্ষকদের দাবিও তিনি নাকচ করে দেন।

উপাচার্য আন্দোলনরত পদত্যাগকারী শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি পদত্যাগকারী শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানাবো, তাঁরা যেন স্বপদে ফিরে আসেন। প্রশাসনের সাতটি পদে পরিবর্তন করা হয়েছে, তবে আমি চাইবো তাঁরা এক সঙ্গে কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দুই মাস ছুটি কাটিয়ে কার্যালয়ে যোগ দেওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ পন্থী শিক্ষকদের লাগাতার আন্দোলন ও ভবন অবরোধের কারণে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করতেন পারেনি উপাচার্য।

ছামির মাহমুদ/এআরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।