অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড : এফবিআইয়ের অপেক্ষায় স্থবির তদন্তকাজ


প্রকাশিত: ০১:১৫ পিএম, ২৬ জুলাই ২০১৫

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ফেডেরাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) আলামত না পাওয়ায় গতি হারাচ্ছে বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ডের তদন্তকাজ।

অভিজিৎ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন। পৃথক একটি হত্যা মামলা দায়ের হবে সে দেশে। তাই এ হত্যাকাণ্ডের ছায়া তদন্ত করেছে দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়। সম্প্রতি এফবিআইয়ের ৫ কর্মকর্তা ঢাকায় আসে ঘটনাস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় থেকে আলামত সংগ্রহ করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যায়।

তবে বাংলাদেশ পুলিশের সহায়তার জন্য এগুলো দেশে পাঠানোর কথা থাকলেও ৪ মাস পরেও এগুলো পাঠায়নি এফবিআই। আর মূলত এ কারণেই তদন্ত ‘গতিহীন’ হয়েছে বলে দাবি করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এ বছরের ফেব্রুয়ারির ২৬ তারিখ অমর একুশে বইমেলা থেকে ফেরার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কয়েকজন দুর্বিত্ত কুপিয়ে হত্যা করে অভিজিৎ রায়কে। এ ঘটনায় অভিজিতের বাবা অজয় রায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

হত্যাকাণ্ডের পরপরই এর দায় স্বীকার করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। দু`মাস পর আল-কায়েদার ভারতীয় উপ-মহাদেশ শাখাও তাকে (অভিজিৎ) হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। তবে আলামত যাচাইয়ে এফবিআইয়ের সহযোগিতা না পাওয়ায় তদন্ত কাজ গতি পাচ্ছে না।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজলুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, ‘তদন্ত নিজ গতিতে চলছে। তবে এফবিআই থেকে আলামতগুলো এখনো পাওয়া যায়নি। সেগুলো পেলে ভালো হতো।’

সম্প্রতি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ‘জড়িত’ কয়েকজন জঙ্গিকে চিহ্নিত ও নাম-পরিচয় পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন পুলিশের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম। তবে তাদের কাউকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সংস্থা।

হত্যাকাণ্ডের ৪ দিন পর শফিউর রহমান ফারাবী নামে একজনকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। অভিযোগ ছিল ফারাবী সামাজিক মাধ্যমে বেশ কয়েকবার অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। তবে তার থেকেও উল্লেখযোগ্য কোন তথ্য পাওয়া যায়নি বলে দাবি পুলিশের।

এ বিষয়ে পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, ‘তদন্ত চলছে। চিহ্নিতদের নাম-পরিচয় পুলিশের কাছে রয়েছে। একাধিকবার অভিযান চালিয়েও তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে দেশের বিভিন্নস্থানে অভিযান চলমান রয়েছে।’

এদিকে তদন্তের গতি দেখে ‘নাখোশ’ অভিজিৎ-এর বাবা শিক্ষাবিদ অজয় রায়। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ ও এফবিআই কেউই মামলার তদন্তের বিষয়ে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করে না। পত্রিকায় দেখলাম বাংলাদেশে ৫-৭ জন আসামি শনাক্ত করেছে তবে তারা এখনো গ্রেফতার হয়নি। হয়তো পুলিশ তথ্য আলামত নিয়ে আরো বেশি যাচাই বাছাই করছে।’

অভিজিৎ-এর স্ত্রী রাফিদা আহমেদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে উল্লেখ করে অজয় রায় জানান, রাফিদার সঙ্গে ই-মেইলে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তবে অভিজিত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমি তার সঙ্গে এখন কোন আলোচনা করি না।

এআর/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।