‘যা মেরেছি, পাঁচবার ভাববে’
গালে চড়। নাকের তলায় মোক্ষম ‘ঘুষি’। সঙ্গে কয়েকটা ‘কিক’। রাস্তাতেই কুপোকাত তিন উত্যক্তকারী বখাটে।
প্রিয়াঙ্কা সিংহ রায়ের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সাঁইথিয়ায়। তিনি বলেন, ‘নিজের সামর্থ্য কতটা জানি। তাই ভয় পাইনি। বিশ্বাস ছিল, ওই তিন ছেলেকে একাই ঘায়েল করতে পারব। করে দেখিয়েও দিয়েছি।’
মঙ্গলবার ভারতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সোমবার বিকেলে পাড়ার বোনকে সাইকেলে চাপিয়ে বেরিয়ে পড়েন পরীক্ষার্থী প্রিয়াঙ্কা। তার অভিযোগ, মাঝ পথে সাইকেল আটকে তিন যুবক তাকে কটূক্তি করে।
প্রতিবাদ করায় হাত ধরে বলে, ‘একটু পাশে চল’। ভড়কে না গিয়ে বোনকে সাইকেলটা দিয়ে এগিয়ে যায় প্রিয়াঙ্কা। ছেলেগুলো জানত না, প্রিয়াঙ্কা তায়কোয়ন্দো-র ব্লু-বেল্ট। ছয় বছর ধরে সে এই মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। মিনিট পাঁচ-ছয়ের মধ্যেই তিন যুবককে কাহিল করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় ওই পরীক্ষার্থী। সাঁইথিয়ারই বাসিন্দা ওই তিন যুবকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
প্রিয়াঙ্কার বাবা নির্মল সিংহ রায় সাঁইথিয়া পৌরসভার কর্মী। জেলা থেকে রাজ্য, এমনকি বীরভূম জেলা পুলিশ আয়োজিত প্রতিযোগিতায় সোনার পদক পেয়েছে এই সাহসিনী।
তার মা সুলেখা দেবী বলেন, ‘আমি জানতাম, ওই তিন বখাটেকে কাবু করতে মেয়েই যথেষ্ট। তবু ঘটনা জেনে ওর কাছে চলে গিয়েছিলাম। লোক জড়ো হয়েছিল। গণপিটুনি ঠেকাতে আমিই বলি, ওদের পুলিশের হাতে তুলে দিন।’
এই ঘটনায় অন্য মেয়েরাও আত্মরক্ষার পাঠ নিতে নতুন করে উৎসাহ পাবে, আশা প্রিয়াঙ্কার প্রশিক্ষক লক্ষ্মীনারায়ণ ভকতের।
প্রিয়াঙ্কা বড় হয়ে পুলিশ হতে চায়। চায়, পথে-ঘাটে মেয়েদের উত্যক্ত করা ছেলেদের শায়েস্তা করতে। তার কথায়, ‘ওদের যা মেরেছি, তাতে ফের কারও সঙ্গে অসভ্যতা করার আগে পাঁচ বার ভাববে!’ আনন্দবাজার।
এসআইএস/এমএস