কোনো প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না আজম খান!
সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ফারুকের ড্রাইভার আজম খান এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। গত শনিবার রাতে গোপনে স্ত্রী সন্তানদের দেখতে নিজ বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলার নওগাঁও গ্রামে এসেছিলেন তিনি।
সেখানেই তার সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের। এসময় তার কাছে সেই রাতের (২০১২ সালের ৯ এপ্রিল গভীর রাত) প্রকৃত ঘটনা জানতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে যান। এ সংক্রান্ত কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি।
জাগো নিউজকে তিনি জানায়, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায় আজম খান। সমাজের অন্য দশজনের মতো পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচতে চান তিনি। দীর্ঘ ফেরারি জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে তাকে। আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠার অবসান হবে কবে এমন প্রশ্নই এখন তাড়া করছে তাকে। এসময় তিনি জানালেন তিন বছরের দীর্ঘ আত্মগোপনের কথা। অসংখ্যবার স্থান বদল করে ফেরারি জীবনে কেমন ছিলেন তিনি? পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন আজম খান আত্মগোপনের বিপর্যস্ত জীবনের কথা বলতে গিয়ে বার বার চোখের পানি ফেলেন। দীর্ঘ সময়ে নানান জায়গায় নানান পেশায় কাজ করে জীবনাপাত করেছেন তিনি। পেশায় ড্রাইভার হলেও ইটভাঙা থেকে শুরু করে জেলের নৌকায় মাছ ধরার কাজও করতে হয়েছে তাকে। মাঝে মাঝে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে দেখা করেছেন গোপনে। এখনো ফেরারি জীবনে বিচিত্র পেশায় অপরিচিত জায়গায় দিন যাপন করতে হয় তাকে। বার বার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ব্যাকুলতা ছিল তার মাঝে।
তবে আজম খান বলেন, ফেরারি জীবন কষ্টদায়ক হলেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইটা নিয়ে আমি গর্বিত। তার একটিই আকুতি, আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চাই।
উলেখ্য, ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল গভীর রাতে সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের এপিএস ফারুক বস্তা ভর্তি টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় তার গাড়ির চালক আজম খান পিলখানায় বিজিবির সদর দফতরে ঢুকিয়ে দেন। পরে বিজিবি সদস্যরা গাড়িসহ তাদের আটক করে। এ ঘটনার পর দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় বয়ে যায়। এরপর ১৬ এপ্রিল অর্থ কেলেঙ্কারির দায়ে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান সুরঞ্জিত। এছাড়া রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা ও কমান্ড্যান্ট এনামুল হককে বরখাস্ত করা হয়।
পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আজম খান চতুর্থ। আলী আজম মতলব দক্ষিণ উপজেলার নওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে ঢাকায় ট্যাক্সিক্যাব চালাতেন। তার গ্রামের বাড়ি মতলব উপজেলার নওগাঁও গ্রামে। তার বাবার নাম আমজাদ হোসেন। পরে এপিএস ওমর ফারুকের গাড়ি চালানোর চাকরি নেন তিনি।
এমএএস/এমএস