ভারতে মূর্তি ভাঙার লড়াই?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৮ পিএম, ০৭ মার্চ ২০১৮

হিন্দুত্ববাদীদের অন্যতম প্রধান আদর্শিক নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর একটি মূর্তি হাতুড়ি দিয়ে কিছুটা ভেঙে বুধবার তার ওপর কালো কালি লাগিয়ে দিয়েছে কলকাতার অতি-বামপন্থী শিক্ষার্থীরা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অন্তত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে।

এর আগে ত্রিপুরার নির্বাচনে বিজেপি বড়সড় সাফল্য পাওয়ার পরের গত কয়েকদিনে রাজ্যের অন্তত দুটি জায়গায় ভেঙে ফেলা হয়েছে লেনিনের মূর্তি। অভিযোগের তীর হিন্দুত্ববাদী বিজেপির কর্মী সমর্থকদের দিকে।

যদিও দলীয় কর্মীদের সরাসরি ওই মূর্তি ভাঙার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে বিজেপি, তবে তারা লেনিনের মূর্তি নিয়ে বামপন্থীদের কটাক্ষও করেছে একই সঙ্গে।

বুধবার শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি ভাঙ্গার সময়ে ছাত্রছাত্রীদের হাতে ছিল লেনিন মূর্তি ভাঙারই প্রতিবাদ সম্বলিত পোস্টার।

lenin

মতাদর্শগত নেতাদের মূর্তি ভেঙে দেয়ার পেছনে কী তাহলে বামপন্থী আর হিন্দুত্ববাদী- এই দুই সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর রাজনৈতিক আদর্শের লড়াই-ই কাজ করেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে পশ্চিমবঙ্গের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক বিমল শঙ্কর নন্দ বলেন, এতদিন বৌদ্ধিক পর্যায়ে সংঘাতটা ছিল বামপন্থী আর জাতীয়তাবাদী, অর্থাৎ আপনি যাদের হিন্দুত্ববাদী বলছেন, তাদের মধ্যে।

‘বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরাই ইতিহাস ব্যাখ্যা করে এসেছে এতদিন। কিন্তু জাতীয়তাবাদীরা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর তাদের মতাদর্শের সমর্থক বুদ্ধিজীবীরা ইতিহাস সমাজ নতুন করে ব্যাখ্যা করছেন এখন।’

‘তাই এই সংঘাতটা ইন্টেলেকচুয়াল পর্যায়ে আছেই। তবে নতুন যেটা যোগ হয়েছে, তা হল ওই দুই মতাদর্শের লড়াই এখন তৃণমূল স্তরেও প্রকট হচ্ছে। এটা সম্ভবত তারই বহি:প্রকাশ।’

lenin

শুধু যে লেনিন বা শ্যামাপ্রসাদের মূর্তিই ভাঙ্গা হয়েছে, তা নয়। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিজেপি তো কংগ্রেসকে হারিয়ে অনেক রাজ্যেই ভোটে জিতেছে। কিন্তু তারপরে সেখানে জওহরলাল নেহরু বা ইন্দিরা গান্ধীদের মূর্তি ভাঙ্গার তো সংবাদ পাওয়া যায়নি!

তাহলে কেন কোথাও লেনিন বা কোথাও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর মতো যারা এই দুই মতাদর্শের অন্যতম প্রধান প্রবক্তা- তাদের মূর্তি ভাঙ্গা হচ্ছে?

‘স্বাধীনতার আগে থেকেই কংগ্রেস ছিল মুক্তমনাদের একটা মঞ্চ। সেখানে বামপন্থীরাও যেমন থেকেছেন, তেমনই দক্ষিণপন্থীরাও ছিলেন। তাই সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কংগ্রেসই বিজেপি-র প্রধান প্রতিপক্ষ হলেও তাদের সঙ্গে সেভাবে মতাদর্শের লড়াই নেই হিন্দুত্ববাদীদের।’

‘কিন্তু বামপন্থীদের সঙ্গে তাদের চরম মতাদর্শগত বৈরিতা। তাই কেরালায় যেটা অনেকদিন ধরেই আমরা দেখছি- দুই মতাদর্শের লড়াই; এবার সেটা কিছু কিছু দেখা যাচ্ছে ত্রিপুরার মতো জায়গাতেও।’ বিবিসি বাংলা।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।