কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ভারতে উপেক্ষিত কেন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:২৪ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ভারত সফররত কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ভারত সরকার ইচ্ছে করে উপেক্ষা করছে কি না, তার সফরের শুরুতেই এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে কানাডার সংবাদমাধ্যমেও বেশ আলোচনা চলছে।

এই প্রশ্নটা মূলত উঠছে এই কারণেই যে ট্রুডো যখন স্ত্রী সোফি ও তার তিন সন্তানকে নিয়ে ভারতে এসে নামেন, তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে যাননি।

অথচ বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধানরা যখন ভারতে আসেন, তখন প্রোটোকল ভেঙে তাদের স্বাগত জানাতে যাওয়াটা প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রায় রুটিনে পরিণত করে ফেলেছেন।

treaudeu

গত মাসেই তিনি তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে স্বাগত জানানোর ক্ষেত্রেও তিনি একই জিনিস করেন।

আরো আশ্চর্যের ব্যাপার হল কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ কিংবা তার দুই প্রতিমন্ত্রী- ভি কে সিং বা এম জে আকবর পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন না।

কানাডার রকস্টার প্রধানমন্ত্রীর জন্য এই উপেক্ষা ছিল একেবারেই বেমানান! সপরিবার ট্রুডোকে ভারতে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন জুনিয়র মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং, যিনি মাত্র চার মাস আগে প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হয়েছেন।

ট্রুডোকে ভারত যে এভাবে শীতল অভ্যর্থনা জানাচ্ছে তার একটা কারণ হতে পারে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তান আন্দোলনের সমর্থকদের প্রতি তার সরকার যে মনোভাব নিয়েছে সেটা।

জাস্টিন ট্রুডোর ক্যাবিনেটে যে চারজন শিখ মন্ত্রী আছেন, তার মধ্যে অন্তত দুজন- হরজিৎ সজ্জন ও অমরজিৎ সোধি প্রকাশ্যেই কানাডাতে খালিস্তান আন্দোলনকে সমর্থন করে নানা বিবৃতি দিয়েছেন।

treaudeu

ভারতে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং গত বছর ট্রুডো ক্ষমতায় আসার পরই এ ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে তাকে একটি চিঠি লিখেছিলেন।

ট্রুডো বুধবার অমৃতসরে শিখদের পবিত্র তীর্থস্থান অমৃতসর সফরে যাবেন, কিন্তু অমরিন্দর সিং তার সঙ্গে দেখা করতে রাজি নন বলেই জানা যাচ্ছে।

রোববার ট্রুডো যখন সপরিবারে তাজমহল সফর করেন, তখন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের অনুপস্থিতিও নজর এড়ায়নি।

অথচ এই আদিত্যনাথই গত মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে রীতিমতো লাল কার্পেট বিছিয়ে তাজমহলে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। তবে জাস্টিন ট্রুডোর ভারত সফরে এই তথাকথিত উপেক্ষার আরও একটা কারণ হতে পারে তার বিচিত্র সফরসূচী।

সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ সরকারপ্রধানদের ভারত সফর শুরু হয় দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানিয়ে ও তারপর হায়দ্রাবাদ হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মধ্যে দিয়ে।

treaudeu

আগ্রা, আহমেদাবাদ, মুম্বাই, হায়দ্রাবাদ বা ব্যাঙ্গালোরের মতো শহরগুলো সচরাচর রাখা হয় সফরের দ্বিতীয়ার্ধে। কিন্তু জাস্টিন ট্রুডোর ক্ষেত্রে তিনি শনিবার ভারতে পা রেখেছেন মুম্বাই দিয়ে। রোববার তিনি কাটিয়েছেন আগ্রায়, সোমবার আছেন আহমেদাবাদে।

এরপর মঙ্গলবার আবার মুম্বাই, বুধবার অমৃতসরে কাটিয়ে তার সপ্তাহব্যাপী সফরের শেষ দুটো দিন, বৃহস্পতি ও শুক্রবার শুধু বরাদ্দ রাখা হয়েছে দিল্লির জন্য।

ফলে কূটনীতিক মহলের অনেকেই বলছেন, ভারতে জাস্টিন ট্রুডোর সফরসূচী যারাই স্থির করুন না কেন, তাদের এটা আরও অনেক ভালভাবে করা উচিত ছিল! বিবিসি বাংলা।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।