শায়েস্তাগঞ্জে পানির স্রোতে ভেসে গেছে খোয়াই নদীর বাঁধ


প্রকাশিত: ০৭:৩৯ এএম, ২২ জুলাই ২০১৫

হবিগঞ্জের শাহজীবাজারে নির্মাণাধীন বৈদ্যুতিক প্লান্টে ভারি মালামাল পরিবহনের জন্য খোয়াই নদীর উপর নির্মিত অস্থায়ী বাঁধটি পানির স্রোতে ভেসে গেছে। একই সঙ্গে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার কুটিরগাঁওসহ ২০/২৫টি গ্রামের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন।

তবে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নদীপাড়ের বাসিন্দারা বন্যা থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী। তানা হলে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার শেরপুর থেকে ৩৩০ মেগাওয়াট শাহজীবাজার পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে খোয়াই নদীর উপর দিয়ে ১২০ চাকার ট্রাকে করে ২২০ টন ওজনের জেনারেটর পরিবহনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু নদীর উপর নির্মিত ব্রিজ দিয়ে এতো ভারী মালামাল পরিবহন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবান্ট লজিস্টিক কারো অনুমতি না নিয়েই নদীর মাঝ বরাবর বাঁধ নির্মাণ শুরু করে।

গত ২৬ মে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে প্রশাসন বাঁধের নির্মাণ কাজ স্থগিত করেন। ২৮ মে তৎকালীন জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নদীতে অবৈধ বাঁধ দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এটি অপসারণের জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। পরে ৭ জুন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শাহজীবাজারে ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ও খোয়াই নদীর শায়েস্তাগঞ্জ ব্রিজের ৫০ মিটার ডাউন স্ট্রিমে অস্থায়ী বাইপাস/ক্রস ড্যাম নির্মাণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় শর্তসাপেক্ষে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে মালামাল পরিবহনের অনুমতি দেয় প্রশাসন।
 
সভায় সিদ্ধান্ত হয় অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পর খোয়াই নদী পানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে জেলায় বন্যা দেখা দিলে এবং হবিগঞ্জবাসী ক্ষতির সম্মুখীন হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবান্ট লজিস্টিক ক্ষতিপূরণ দেবে। এ বিষয়ে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
 
প্রশাসনের সঙ্গে লিখিত চুক্তির পর আবারও কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি রেখে কাজ করলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা থেকেই গিয়েছিল। গত কয়েকদিন ধরে জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত হলে খোয়াই নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। একই সঙ্গে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করে।
 
এদিকে রোববার দিবাগত রাতে এ বাঁধ ভেঙে যায়। একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। তবে রক্ষা পেয়েছেন বাঁধের উজানে থাকা লোকজন। বাঁধ ভেঙে না পড়লে পানি উপচে এলাকায় বন্যা দেখা দেয়ার আশঙ্কা ছিল বলে দাবি করছেন স্থানীয় লোকজন।

কামরুজ্জামান আল রিয়াদ/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।