কার ভাগ্যে জুটবে বসুন্ধরার লাল গাড়ি!
ঘড়ির কাঁটা তখন ছয়টা ছুঁই ছুঁই করছে। রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের নীচতলায় সায়মন নামে এক ক্ষুদে শিশু বার বার সাজিয়ে রাখা লাল রংয়ের ( ১৫০০সিসি) টয়োটা নাভানা গাড়িটি দেখছিল।
পাশে দাঁড়ানো তার চাচা মৃদু হেসে ছেলেটিকে উদ্দেশ্য করে বলছিলেন, লটারিতে গাড়িটা পেলে আঙ্কেল নিয়ে ঘুরতে হবে কিন্তু। ছেলেটি বলল, আঙ্কেল আমার কাছে ৫০টি টিকেট আছে। গাড়ি পেলে অবশ্যই চড়াবো।
বসুন্ধরা সিটি শপিং মল কর্তৃপক্ষ রমজানের শুরু থেকে বিক্রেতাদের জন্য ২০০ টাকার পণ্য কিনে ১১টি মেগা ও শতাধিক সুপার লটারির কুপনের ব্যবস্থা রেখেছিল।
মেগা পুরস্কারের তালিকায় দুটি গাড়ি ছাড়াও হীরার সেট, সোনার গহনা, মোটরসাইকেল, এয়ারট্রিপসহ ট্যুর প্যাকেজ, এলইডি টিভি ও স্কুটারও ছিল।
সুপার লটারির পণ্যের তালিকায় এয়ারকন্ডিশন, ফ্রিজ,টিভি, ঘড়ি,মোবাইল, ইলেকট্রিক ওভেন, ডিনার সেট, প্রেসার কুকার, কফিসেট, হটপট, মাইক্রোওয়েভ ওভেন ইত্যাদি ছিল।
শুক্রবার ঈদের আগের দিনও লটারিতে মেগা পুরস্কার পাওয়ার আশায় সেখানে হাজার হাজার ক্রেতার ভীড় লেগে ছিল। মোট ১২০টি পুরস্কারের মধ্যে সবার আকর্ষণ ছিল ১৫০০ সিসির টয়োটা গাড়িটির দিকে।
কেউ জানেনা কার ভাগ্যে জুটবে প্রথম পুরস্কার লাল রঙের টয়োটা গাড়িটি। কিন্তু গোটা রমজান মাস জুড়েই এটি পাওয়ার আশায় হাজার হাজার ক্রেতায় বসুন্ধুরা ভীড় জমিয়ে শপিং করেছেন।
শুক্রবার সরেজমিন বসুন্ধরা শপিং মল ঘুরে দেখা গেছে, আগত ছোট বড় সকলেই নীচ তলা থেকে নয়তলা পর্যন্ত ঘুরে ফিরে শপিং শেষে একটি বারের জন্য হলেও সাজিয়ে রাখা গাড়ির সামনে আসছেন। তারা একে অপরকে দেখিয়ে বলছেন, দেখিস আমিই হবো লটারি বিজয়ী।
রায়েরবাজারের গৃহবধু তনিমা খান তার ৯ ও ছয় বছর বয়সী দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে তৃতীয় বারের মতো বসুন্ধরায় এসেছেন। জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ছেলেমেয়েরা গাড়িটি দেখতে বার বার আসতে চায়। আগের দুই বার শপিং করে ২৫টি টিকেট পেয়েছেন। ওরা বাসায় এগুলো বার বার বের করে নাম্বারগুলো দেখে রাখে।
লালবাগের পোস্তার চামড়া ব্যবসায়ী মোবারক আলী আট তলার ইনফিনিটি থেকে ২,৩৫০টাকা দিয়ে একটি শার্ট ও সাড়ে ৭শ’ টাকা দিয়ে একটি পাজামা কিনে কাউন্টারে টাকা পরিশোধ করছিলেন। এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তার ছেলের ছয় বছরের নাতিন বার বার দোকানদারকে লটারির টিকেট দিতে অনুরোধ করছিলেন।
ইস্কাটন এলাকার সরকারি চাকরিজীবি আহমেদউল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি বছর দেখি গাড়ি সাজিয়ে রাখা হয়। শপিং করলে টিকেটও দেয়া হয়। কিন্তু লটারি কখন কিভাবে হয়ে যায় তা জানতে পারিনা। গাড়ি বা অন্য মেগা পুরস্কারগুলো কারা পায় তা সবাই জানেনা। তিনি বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পুরস্কার দেয়া উচিত।
জানা গেছে শুধু বসুন্ধরাতেই নয়, রাজধানীর অন্যান্য বিভিন্ন শপিং মলেও এ ধরণের লটারির আয়োজন করা হয়েছে। যে সকল মার্কেটে এ ধরণের অফার ছিল সে সব মার্কেটে ক্রেতার ভিড় বেশি ছিল।
এমইউ/এসকেডি/পিআর