ছবিতে উত্তর কোরিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১৮ এএম, ১১ জানুয়ারি ২০১৮

বিদায়ী বছরে আন্তর্জাাতক সংবাদপত্র জুড়ে ছিল উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গ। তা সত্ত্বেও দেশটি বিচ্ছিন্ন ও প্রায় অজানা। ব্রিটিশ ইনস্টাগ্রামার পিয়ের ডেপন্ট নিয়মিতভাবে উত্তর কোরিয়ায় গিয়ে সেখানকার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ছবি তোলার চেষ্টা করেন।

এ পর্যন্ত তিনি সাত বার উত্তর কোরিয়া ভ্রমণ করেছেন এবং সেখানকার সাধারণ মানুষদের ছবি তুলেছেন। তার তোলা কিছু ছবি নিয়ে ক্যাপশন নিউজ করেছে জার্মানভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলে।

অজানার আকর্ষণ

jagonews24

বলা হয়ে থাকে, উত্তর কোরিয়া গোপনে থাকতেই পছন্দ করে। দেশটি কিন্তু বিদেশি পর্যটকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকে। উত্তর কোরিয়ায় পর্যটক হওয়ার অর্থ, ‘বিশেষ গাইড’রা প্রতিপদে আপনার সঙ্গে থাকবে ও নজর রাখবে।

পুঁজিবাদের ভূত?

jagonews24

ডেপন্ট প্রথম উত্তর কোরিয়ায় যান ২০১৩ সালে। তখন পর্যন্ত কর্তৃত্ববাদী দেশটিতে পরিবর্তন এসেছে বলে তিনি লক্ষ্য করেছেন। বিগত দু’তিন বছরের মধ্যে পিয়ংইয়াংয়ে নিজের সম্পদ প্রদর্শন করাটা গ্রহণযোগ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সত্ত্বেও পিয়ংইয়াংয়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বাড়ছে ও প্রচুর বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে।

আলাপ করা সহজ নয়

jagonews24

ডেপন্ট দেখেছেন, পিয়ংইয়াংয়ের রাস্তায় মানুষজনের সঙ্গে কথা বলা সহজ নয়। প্রথমত, গাইডদের একজন সবসময় কান খাড়া করে শোনে। দ্বিতীয়ত, স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের ছবি তুলতে দিতে বিশেষ পছন্দ করেন না। রাস্তাঘাটে নারীরা ক্রমেই আরও ফ্যাশনদুরস্ত হয়ে উঠছেন বটে, তবে সেটা প্রধানত বড় শহরগুলোতে।

শহর বনাম গ্রাম

jagonews24

পিয়ংইয়াংয়ের মেট্রো স্টেশনটি দেখলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। মনে হবে যেন কারুকার্য করা শ্বেতপাথরের দেয়ালের ওপর সুবিশাল ঝাড়বাতি ঝুলছে। ডেপন্টের কাছে উত্তর কোরিয়া ‘ছবি তোলার একটা আশ্চর্য জায়গা’। কেননা এখানে রাস্তাঘাটে কোনো বিজ্ঞাপন নেই। অপরদিকে শহরে স্বাচ্ছল্যের নানা চিহ্ন চোখে পড়লেও, গ্রামাঞ্চলে এখনও চরম দারিদ্র্য বিরাজ করছে।

টুরিস্টরা যা দেখতে পান না

jagonews24

উত্তর কোরিয়ায় টুরিস্টরা যা দেখতে পান না, তা হলো দেশটির গ্রামাঞ্চলের মানুষদের বাস্তবিক পরিস্থিতি। সামরিক খাতে বিপুল বিনিয়োগ করলেও, দেশটি কৃষিপ্রধানই রয়ে গেছে। উত্তর কোরিয়ার প্রত্যেকটি ছোট ক্ষেতে চাষ করা হয়, প্রতি বর্গমিটার জমি ব্যবহার করা হয়।

মেকি প্রাচুর্য!

jagonews24

টুরিস্টদের শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে বড় বড় কৃষি সমবায়ের গাইডেড টুরে। ডেপন্ট দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হামহুং-এর কাছে একটি কৃষি সমবায়ে যাওয়ার সুযোগ পান। সেখানকার ছোট্ট বাজারটিতে সুন্দর করে পণ্য সাজানো ছিল এবং অভাবের কোনো চিহ্নই ছিল না। ডেপন্ট মন্তব্য করেছেন, এটি সম্ভবত ‘শুধু লোক-দেখানো’।

হালফ্যাশনের স্কুল, তবে সবার জন্য নয়

jagonews24

উত্তর কোরিয়ায় টুরিস্ট হিসেবে সেখানকার একটি এলিট স্কুল বা মডার্ন স্কুল না দেখে ছাড় নেই। সংডোওয়ান ইন্টারন্যাশনাল সামার ক্যাম্পটি পূর্ণ সংস্কারের পর আবার খোলা হয় ২০১৪ সালে। সেখানে ছেলেমেয়েরা সর্বাধুনিক আর্কেড গেম্স নিয়ে খেলছে আর তাদের ব্যবহারের জন্য গোটা বিশেক কম্পিউটার রাখা আছে। এই দৃশ্য দেখে ডেপন্টের কাছে ‘কিছুটা অবাস্তব’ মনে হয়েছে।

সর্বত্র মিলিটারি

jagonews24

দেশটির সত্ত্বা ও সমাজের প্রাণকেন্দ্র হল মিলিটারি। দেশের জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ মিলিটারিতে কাজ করে। দেশের অর্থনৈতিক ক্ষমতার তুলনায় সামরিক খাতে পিয়ংইয়াংয়ের ব্যয় বিশ্বের বৃহত্তম মিলিটারি বাজেটগুলির মধ্যে পড়ে। উত্তর কোরিয়ার কোমলমতি ছেলেমেয়েরা মিলিটারি প্রতীকে অভ্যস্ত। এমনকি শিশুদের খেলার জায়গাতেও মিলিটারি ভাস্কর্য রয়েছে দেশটিতে।

ব্যক্তি উপাসনা
মিলিটারি, রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ এবং কিম জং-উন ও তার পূর্বপুরুষদের ঘিরে ‘ব্যক্তি উপাসনা’ -এই হলো উত্তর কোরিয়ার কাহিনি। মহান নেতাদের কিংবদন্তিকে বাঁচিয়ে রাখতে ও তাদের সুবিশাল মূর্তিগুলোর পরিচর্যায় যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়, তা দেখে ডেপন্ট চমৎকৃত৷

এমবিআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।