পরকীয়া প্রেম, ভালোবাসায় ‘বিশ্বাস’ কি হারিয়ে যাচ্ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৩৮ এএম, ০৭ জানুয়ারি ২০১৮

ভালোবাসা, একটি মানবিক অনুভূতি। বিশেষ কোনো মানুষের জন্য স্নেহের শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ, আত্মার টান। ভালোবাসাকে আসলে বর্ণনা দিয়ে শেষ করার মতো নয়। এ ভালোবাসা টিকে থাকার মৌলিক উপাদান ‘বিশ্বাস’। এ বিশ্বাসের অভাব হলেই শুরু হয় যত বিপত্তি। পরকীয়া প্রেম নতুন বিষয় নয়। কিন্তু দাম্পত্য জীবনে যদি মিথ্যা আর প্রতারণা ঢুকে সংসার বা সমাজে সমস্যা তৈরি করে, তবে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই ভাবা উচিত। এমনটাই মনে করেন জার্মানির পরিবার ও জীবনসঙ্গী বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা।

পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ার কারণ?
বিবাহিত নারী বা পুরুষের কাউকে ভালো লাগতে পারে বা তারা কারও প্রেমেও পড়তে পারেন। বিয়ের পর প্রেমে পড়া এবং ভালোলাগার মানুষটির সাথে অবৈধ সম্পর্ক তৈরি করাই পরকীয়া। সাধারণত ধরে নেয়া হয়, তারাই এই সম্পর্ক তৈরি করে যারা দাম্পত্য জীবনে পুরোপুরি সুখি নয় বা যাদের সম্পর্কে সমস্যা রয়েছে। তবে এর ব্যতিক্রমও হত পারে।

এ জন্য কে দায়ী?
দাম্পত্য জীবনে অশান্তির একটি বড় কারণ হচ্ছে পরকীয়া। এ কারণে বহু সংসার ভেঙে যায়। তবে এ ব্যাপারে নারী বা পুরুষ, কে দায়ী তা বলা মুশকিল। একজন পার্টনার পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে গেলে, অন্যজন তার প্রতি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যও অনেক সময় নিজেকে অন্য আরেকজনের সাথে জড়িয়ে ফেলেন।

সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেম
দিনের বেশিরভাগ সময়ই মানুষ কর্মস্থলে কাটায়। সে কারণে নিজের নানা সমস্যার কথা অনেকেই সহকর্মীদের সাথে শেয়ার করে থাকেন। এসবের মধ্য দিয়ে প্রথমে সহানুভূতি এবং পরে পরকীয়া প্রেমের জন্ম হতে পারে। জার্মানিতে এ রকম ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে।

অফিসিয়াল ট্যুর
কোনো কোনো সহকর্মীর মধ্যেই হালকা সম্পর্ক থাকলে অফিসিয়াল ট্যুরে গিয়ে সে সম্পর্ক আরও গাঢ় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ধরনের ঘটনা সুখি দম্পতিদের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে। অনেকে পরে চাইলেও সে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা বেশ কঠিন হয়ে যায়।

ক্ষমা করা কি সম্ভব?
১০-১৫ বছর সংসার করার পর যখন কেউ পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন, তখন স্ত্রী বা স্বামী তা জেনে গেলে ক্ষমা চান এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সবকিছু ভুলে গিয়ে আবারও আগের মতো হতে চান। অনেকে মুখে ক্ষমা করে দিলেও, দু’জনের ভেতরে সন্দেহটা থেকেই যায়।

ক্ষণিকের আনন্দ
বিবাহিত নারী বা পুরুষ হঠাৎ কোনো দুর্বল মুহূর্তে অন্য কারও সঙ্গে রাত কাটানোর সুযোগ নিয়ে থাকেন। এ রকম ঘটনা পুরুষদের ক্ষেত্রেই নাকি বেশি ঘটে, বিশেষ করে স্ত্রীর প্রিয় বান্ধবীর সাথে। শুধুমাত্র এক রাতের ব্যাপার হলে অনেক স্ত্রীই স্বামীকে ক্ষমা করে দেন। এমনটাই জানিয়েছের পরিবার ও জীবনসঙ্গী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এরিক হেগমান।

যাদের ভোগান্তি
মা-বাবার পরকীয়া প্রেমে কষ্ট পায় তাদের সন্তানরা। বিশেষ করে তাদের বয়স যদি কম হয়। হঠাৎ করে মা-বাবার মধ্যকার সম্পর্ক বা অন্যরকম আচরণ শিশুদের আতঙ্কিত করে। শিশুমনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা হয়ত সারাজীবন থেকে যায়।

স্যোশাল মিডিয়া
আধুনিক বিশ্বে স্যোশাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমও পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ার একটা কারণ। তবে জার্মানিতে পরকীয়া প্রেমে স্যোশাল মিডিয়ার ভূমিকা তেমন বড় নয়।

কথা বলুন, কথা বলুন আর কথা বলুন
ভালোবাসার সম্পর্কে যখন চিড় ধরতে বা দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে তখনই নিজের অসন্তোষ বা ভালো ‘না’ লাগার বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলুন। প্রয়োজনে শতবার, হাজারবার। কারণ পরকীয়া প্রেমে যে শুধু একটি পরিবারই ভেঙে যায়, তা নয়। এতে সামাজিকভাবেও নানা জটিলতা দেখা দেয়। তাই খোলাখুলি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার পরামর্শ দিয়েছেন জার্মান বিশেষজ্ঞ এরিক হেগমানের। সূত্র : ডিডাব্লিউ

আরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।